বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যা করার ইতিহাস, এক দলীয় শাষনতন্ত্র কায়েম করার ইতিহাস, ২০১৪ থেকে প্রবঞ্চনামূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ এদেশে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের আমলে ট্যাক্স ছাড়ের নামে যে পরিমার অর্থ লুটপাট হয়েছে তা যদি অর্ধেকও রোধ করা যেতো, তাহলে জাতীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাজেট আরও তিনগুন করা যেতো। খুলনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার বিষয়ক তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, লুটপাট ও চোরতন্ত্রের রাজনীতি আওয়ামী লীগই শুরু করেছে যা শেখ মুজিবের আমল থেকে শেখ হাসিনার আমল পর্যন্ত অব্যহত ছিলো। সেই কারণে শেখ হাসিনার সময়ে একটি অবৈধ ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের শত শত জীবন দিতে হয়েছে। জনতার রক্তের যে প্রত্যাশা বা আকঙ্খা সেটিকে উর্দ্ধে তুলে ধরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে সবার আগে বাংলাদেশ -এই নীতি আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
এ ছাড়া তিনি বলেছেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফাকে রাজনীতির মহাকাব্য। এই দফার মধ্যেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানসহ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাস্তবায়নের পথ দেখানো হয়েছে। আমাদের এই ভাবনাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের সকল নেতাকর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই এই ৩১ দফার অ্যাম্বসেডর।
শুক্রবার খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত খুলনা-বরিশাল বিভাগীয় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ সেমিনারের আয়োজন করে।
এর আগে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সেমিনারের কার্যক্রম। এরপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বিডিজবস’র প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ডিডব্লিউ একাডেমির প্রভাষক ড: মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, এ এম জেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: সায়েম মোহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক ড: সাইফুল ইসলাম খন্দকার, শিখো’র প্রতিষ্ঠাতা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: শামীমা সুলতানা, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক ড: তৌফিক জোয়ার্দার প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বাবী হেলাল, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেকসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সেমিনারে আলোচকরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তারা বলেন, কর্মসংস্থানের নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মাতৃভাষার পাশাপাশি আরো ২/৩টি বিদেশী ভাষা শিখতে হবে। ইন্টারনেট ব্যয় হ্রাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ সময় সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অতিথিরা।
অতিথিরা বলেন, তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাদের নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যাবে। তারা যদি এখন থেকেই রাষ্ট্রের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে ভাবা শুরু করে তাহলে আগামীতে সমস্যা সমাধানেরও উপায় তারাই বের করতে পারবে।