বর্ষাকালের এক অনিন্দ্যসুন্দর, সুগন্ধি ও সৌন্দর্যমন্ডিত ফুল কদমফুল। দেখতে হলুদাভ-সাদা বা কমলা মিশ্রিত এবং গোলাকার। মিষ্টি ও মনোহর এ ফুলটি মূলত বর্ষাকালে ফুটে। এই ফুলটি আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও শিশিরভেজা সকালকে মনে করিয়ে দেয়। বর্ষার প্রথম বৃষ্টির সাথে কদমফুলের যেন এক অপূর্ব মিলন। তাই কদমফুলকে বলা হয় বর্ষার দূত।
শ্রীমঙ্গল হচ্ছে বৃষ্টি ও প্রকৃতির শহর। আর বর্ষাকালে এখানে কদমফুল প্রকৃতিতে এক অনন্য রূপ ধারণ করে। শহরের নানা প্রান্তে বিশেষ করে চা গবেষনা ইনষ্টিটিউট, লাউয়াছড়া জাতীয় পার্ক, রাস্তার ধারে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে কদম গাছ দেখা যায়। বর্ষা নামলেই কদম গাছের ডালে ডালে ফুটে উঠে সোনালি সাদা গোল ফুল। বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজে থাকা কদম ফুলের ঘ্রাণ এবং ঝড়ে পড়া ফুলের পাঁপড়ি সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়।
শ্রীমঙ্গল দেশে চায়ের রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত। এক নামেই যার পরিচিতি। সবুজে ঘেরা পাহাড়, টিলা, বৃষ্টি ভেজা বন আর সুঘ্রানময় বাতাসের শহরে বর্ষাকালে শুভ্র হাসি হয়ে ফুঠে ওঠে কদম ফুল। কদমফুলের সৌন্দর্য শুধু চোখে নয়, মনেও স্থান করে নেয়। বৃষ্টির জলে ভিজে থাকা কদমফুল বর্ষাকে করে তুলে আরও রঙিন। ওইসময় মনে পড়ে পুরোনো দিন ও শৈশবের স্মৃতি। কদমগাছগুলো অপেক্ষায় থাকে বর্ষার প্রথম ফোঁটার। বৃষ্টির সাথে সাথে কদম গাছ উপহার দেয় প্রকৃতির এক মুগ্ধতা আর ঘ্রানে ভরা কদম ফুল।
বাংলাদেশ, ভারতের উষ্ণ অঞ্চল, চীন, মালয় কদমের আদি নিবাস। কদম ফুলের অনেক ঔষধি বা ভেষজ গুন রয়েছে। কদম গাছের ছাল জ্বরের ঔষধ হিসেবে উপকারী। এটি হজম শক্তি বাড়াতে, পেটের সমস্যা সমাধানে এবং ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কদম গাছের ছাল ও পাতা-বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহ্নত হয়।
এক সময় বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে, বাড়ির সামনে, রাস্তার পাশে, পুকুর ও খালের পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে নান্দনিক সৌন্দর্য্যের কদম গাছের ব্যাপকভাবে দেখা গেলেও এখন তা আর খুব একটা চোখে পড়ে না।
শ্রীমঙ্গলে রয়েছে সবুজের সমারোহ। দেশে সবুজের শহর শ্রীমঙ্গল। বাংলাদেশের সবচে বেশি সবুজ-শ্যামল চা বাগান রয়েছে শ্রীমঙ্গলে। যায় সংখ্যা ৪৪টি। এজন্য শ্রীমঙ্গল দেশে চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। তবে বর্ষাকাল এলে এই শহর হয়ে উঠে আরো সজীব। কারন তখন বর্ষার প্রতীক হয়ে ফুটে শুভ্র আর সোনালী রঙের এক ফুল কদম।