গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তার আগে বাশারকে আদালত অঙ্গনেই কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তার ওপর ডিমও নিক্ষেপ করেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। তার আগে গুলশান থানার মামলায় খায়রুল বাশারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক খালিদ সাইফুল্লাহ।
দুপুর ১টার দিকে খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এ সময় বাশারের কাছে প্রতারিত হওয়া শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা আদালতে হাজির হন। তারা বাশারের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
ভুক্তভোগীদের চাপে বাশারকে আদালতে তুলতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এ সময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। দুপুর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলার জন্য বের করা হয় বাশারকে। এ সময় তার হাতে হাতকড়া, পরনে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট ছিল।
সিএমএম আদালতের গেটে পৌঁছা মাত্রই তার ওপর ডিম নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে তাকে দ্রুত সিএমএম আদালতের তৃতীয় তলায় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালতে নেওয়া হয়। পথে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা ভুক্তভোগীরা তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন। আদালতকক্ষে ঢোকার সময়ও তার ওপর হামলা চালানো হয়, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।
এ সময় আইনজীবী ও ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় আদালত প্রাঙ্গণ। বেশকিছুক্ষণ চলে হৈচৈ হট্টগোল। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে কিছুটা নীরব হয় পরিবেশ। এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। বাদীপক্ষে অ্যাডভোকেট জামাল উদ্দিন খন্দকার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, বাশার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান। লন্ডন, আমেরিকা, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। ক্যামব্রিয়ানের অনেক শিক্ষার্থীর জীবন শেষ করে দিয়েছেন তিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো কাজ করেছেন। বর্তমান যুগের নমরুদ তিনি। প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৫ কোটি টাকা খরচ করে ‘বাশার বাহিনী’ গঠন করেছেন। যারা টাকার জন্য যেত তাদের ওপর নির্যাতন চালাতো ওই বাহিনী।