চা উৎপাদনে বাংলাদেশে ২০২৫ সালের শুরুটা হয়েছে অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার কেজি যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১ লাখ ৩৩ হাজার কেজি বেশি।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশে মোট চা উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার কেজি। ফলে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য এই বৃদ্ধিকে চা বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা দেশের আবহাওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি, সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং বাগানগুলোর আধুনিকায়নকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন।
চা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে দেশের ১৭০টি চা বাগানে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চা উৎপাদন হয় ১০ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার কেজি। যা ছিল দেশের চা শিল্পের ১৬৯ বছরের ইতিহাসে চা উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
চা বোর্ডের সর্বশেষ মাসিক বুলেটিনের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশের চা বাগানগুলোতে ১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৩ লাখ ৯ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ২৪ হাজার কেজি, মার্চে ১২ লাখ ৮৯ হাজার কেজি, এপ্রিলে ২৩ লাখ ৩১ হাজার কেজি এবং মে মাসে ৮৬ লাখ ৪৮ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়। তবে গত বছর একই সময়ে দেশে চা উৎপাদিত হয়েছিল ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার কেজি। এ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর ৫ মাসে ১১ লাখ ৩৩ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদিত হয়েছে।
বর্তমানে দেশে মোট ১৭০টি চা বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক নিয়োজিত থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চা সরবরাহের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের উৎপাদন প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ দেশের চা উৎপাদন পূর্ববর্তী সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
চা বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের জন্য দেশে মোট চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ কেজি। সংশ্লিষ্টদের আশা, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং আগের মতো উৎপাদন অব্যাহত থাকলে নির্ধারিত টার্গেট ছাড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে না।
চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং রপ্তানির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো সম্ভব হবে। এছাড়াও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও বাগান এলাকার অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।