রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল চালু হওয়ার পর প্রায় অর্ধ শতাব্দি পেরিয়ে গেলেও ক্যান্সার রোগীর জন্য ইনডোর বিভাগ খোলা হয়নি। শুরু থেকেই শুধু বর্হিবিভাগের ওপর নির্ভর করে চলছে চিকিৎসা সেবা। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কোবাল্ট-৬০ রেডিওথেরাপি মেশিন বিকল থাকায় বন্ধ রয়েছে রেডিওথেরাপি। মাত্র দুইজন চিকিৎসক নিয়ে প্রতিদিন বাড়তে থাকা রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরতদের।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সালে ২৫০ শয্যা নিয়ে রমেক হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে ক্যান্সার বর্হিবিভাগে ছিলেন দুইজন চিকিৎসক একজন মেডিকেল অফিসার এবং একজন সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা এক হাজার হলেও ক্যান্সার বিভাগের জনবল বাড়েনি। সহকারী চিকিৎসক পদও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। তবে উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে বিভাগটির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন ৮০–৯০ জন ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু বিকল কোবাল্ট মেশিনের কারণে ২০১৫ সাল থেকে রেডিওথেরাপি বন্ধ রয়েছে। আউটডোরে সীমিত পরিসরে কেমোথেরাপি দেওয়া হলেও শয্যা সংকট তীব্র। ডে-কেয়ার সেন্টারের মাত্র ৪টি শয্যায় প্রতিদিন ৬০–৭০ রোগীর কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে, যেখানে এক শয্যায় ৭–৮ জন রোগীকে একসঙ্গে সেবা নিতে হয়।
চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২৮৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে ৮৫ জনই স্তন ক্যান্সার রোগী অন্যান্য ক্যান্সারের তুলনায় সংখ্যায় বেশি। রোগীরা জানান, দীর্ঘ সিরিয়াল ও জনবল সংকট তাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু জনবল সংকট প্রকট। বিষয়টি সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং জনবল বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।