বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বাউল সোনিয়ার পরকীয়ার জেরেই স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:২২ PM আপডেট: ০৩.১২.২০২৫ ৮:৩১ PM

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পী স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমের জেরে সুমন খলিফা (৩৫) নামে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্ত্রীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
 
গ্রেপ্তারকৃত হলেন- ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের উত্তর নরসিংহপুর এলাকার আবুল কাশেম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান ওরফে ইউসুফ (৪২), তার শ্যালক চর কাশীপুরের আব্দুর রাজ্জাকোর ছেলে আব্দুর রহমান (২৮), সহযোগী উত্তর নরসিংহপুরের প্রয়াত বাদশার ছেলে বিল্লাল হোসেন (৫৮), সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ির আব্দুল হাই হাওলাদারের ছেলে আলমগীর হাওলাদার (৪৫) ও একই এলাকার দিদার বক্সের ছেলে নান্নু মিয়া (৫৫) এবং নিহতের স্ত্রী বাউল শিল্পী সোনিয়া আক্তার (২২)।  

বুধবার দুপুরে আদালতে মেহেদী ও তার শ্যালক আব্দুর রহমান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ইয়াসিন আরাফাত। 

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুজন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে। 

নিহত সুমন খলিফা বরিশালের আগৈলঝড়ার আন্দারমানিক গ্রামের মন্টু খলিফার ছেলে। স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকে বিয়ে করে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত ১ ডিসেম্বর সকালে ফতুল্লার কাশিপুরের মধ্য নরসিংহপুর এলাকার সড়কের উপর থেকে সুমনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা মন্টু খলিফা।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ তদন্তে নিহতের স্ত্রী ও তার পরকিয়া প্রেমিকের জড়িত হওয়ার প্রমাণ পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যকাণ্ড। আর পুলিশ আসামিদের দেখানো তথ্য অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে একটি চাপাতি ও একটি সুইচ গিয়ার চাকুও উদ্ধার করেছে।

জেলা পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত সুমন খলিফা বেকার ছিলেন। তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বিভিন্ন বাউল ক্লাবে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ৩০ নভেম্বর রাতে সুমন ও সোনিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে পঞ্চবটি এলাকায় একটি গানের ক্লাবে যান। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে স্ত্রীকে অনুষ্ঠানে রেখে বেরিয়ে যান সুমন। 

আর দুই মাস আগে এক গানের অনুষ্ঠানে পরিচয়ের সূত্র ধরে সোনিয়ার সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী হাসান ইউসুফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোনিয়া বিভিন্ন সময় মেহেদীর কাছ থেকে টাকা ধারও নিতেন এবং নিয়মিত মোবাইলে কথা বলতেন দুইজন। তাদের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি নিহত সুমন জেনে যাওয়ায় সংসারে কলহের সৃষ্টি হয়। পরে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইউসুফসহ অন্যরা। 

ঘটনার রাতে টাকা ধার দেওয়ার কথা বলে পঞ্চবটি এলাকা থেকে সুমনকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেন মেহেদী হাসান। পরে তাকে মধ্য নরসিংহপুর এলাকার একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সুমনকে খুন করা হয়।


আরও সংবাদ   বিষয়:  বাউল সোনিয়া   বাউল শিল্পী   সুমন খলিফা   কুপিয়ে হত্যা  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৮৪১০১১৯৪৭, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত