যখন খুশি তখন খুলে। যখন ইচ্ছা বন্ধ করেন। অফিস খুলে একটু সময় বসেন। তখন কেহ আসলে মন চাইলে দু’চারটি ট্যাবলেট দেন। ইচ্ছা না হলে ঔষধ নেই বলে বিদায় দেন রোগীদের। পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংঙ্গল কমিউনিটি ক্লিনিক এমন চিত্র সব সময় দেখা যায়।
মোট কথা ওই ক্লিনিকের কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সি এইচ সি পি) শিল্পি দাসের মর্জির উপর চলে সেহাঙ্গল ক্লিনিক। নিয়ম রয়েছে সকাল নয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খুলে মানুষকে সেবা দান করা। অথচ, সকাল সাড়ে এগারটা থেকে দুপুর বারটার মধ্যই তালা জুলে ওই ক্লিনিকে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগে গত সোমবার দুপুর বারটার দিকে সেহাঙ্গল কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে গিয়ে দেখা যায় দরজায় জুলে আছে তালা। এসময় দরজার সামনে বসে আনুমানিক ৫২ বছর বয়সি এক মহিলা তার তের বছর বয়সি নাতনীকে নিয়ে বসে আছেন ক্লিনিকের সামনে। ওই মহিলার নাম আয়সা বেগম।
জানতে চাইলে আয়সা বলেন আমার শ্বাসের রোগ। কোমর হাটুতে ভীষণ ব্যাথা। আইছিলাম রোগের কথা বলে একটু ঔষধ নিতে। সব সময় আসতে পারিনা। আর আসলেও এখানে কাউকে পাইনা।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় মিঠু খান নামে এক যুবক। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন পূর্বে মাঠে কাজে গিয়ে পা কেটেছে। পায়ে কোন রকমে ন্যাকড়া দিয়ে বেধে চিকিৎসার জন্য আসছিলাম ক্লিনিকে। ক্লিনিকের শিল্পি দাস আমাকে কোন ঔষধ না দিয়ে বিদায় করেন। তিনি বলেন ব্যাথার কোন ঔষধ নেই। উপজেলায় গিয়ে দেখেন। মিঠু বলেন, শিল্পি ম্যাডাম নিয়মিত অফিসে আসেনা। মাঝেমধ্য দশটা,এগারটায় এসে কিছু সময় অপেক্ষা করে চলে যান।
এ সময় ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারি রেদওয়ান নামে একজনের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দিলে তিনি দৌড়ে আসেন ক্লিনিকে। এসে তালা খুলে চেয়ারে বসেন। জানতে চাইলে তিনি নিজেও খোদ অভিযোগ করেন শিল্পি দাসের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন তাদের ক্লিনিকে তিন জনের পদ আছে। ওই তিন জনের মধ্য দু'জন ভাগ ভাগ ডিউটি করে। তাদের মাঠে কাজ থাকে। তবে সি এইচ সি পি শিল্পি দাসের কাজ এখানে। তিনি ঠিকমত অফিসে আসেন না। ইচ্ছেমত আসেন। যখন খুশি তখন চলে যান। ষ্টোরে যতেষ্ট পরিমান ঔষধ থাকা স্বত্তেও সবাইকে ঔষধ দেননা। আবার যার সাথে তার ভাল দহরম আছে তাকে বেশি ঔষধ দিয়ে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য রাখেন। স্বাস্থ্য সহকারি রেদওয়ান বলেন, ক্লিনিকে যথেষ্ট পরিমান ঔষধ রয়েছে। তিনি সবাইকে ঔষধ দেননা।
অভিযোগের বিষয়ে শিল্পি দাসকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার আমার বাচ্চাটা একটু অসুস্থ থাকায় আগেভাগে বাসায় আসছি। দেরি করে অফিসে আসার বিষয়ে পুনরায় জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, আমার বাসা দূরে তাই মাজেমধ্য আসতে একটু দেরি হয়।
নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প:প: কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে এর আগেও একই অভিযোগ পেয়ে সোকাস করেছিলাম। তিনি অফিসে একটু অনিয়মিত। সেটা অনেকেই অভিযোগ করেছেন। পুনরায় তাকে সোকাস করে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
আনোয়ার হোসেন
-বাবু/ফাতেমা