নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১ তম প্রয়ান দিবস উপলক্ষে কথা-কবিতায় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়েছে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন, ‘মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের মুল্য দিতে হয়, সে প্রাণ অমৃতলোকে/ মৃত্যুকে করে জয়। " অনবদ্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির মণিকোঠায় ঠাঁই নিয়েছেন। কিন্তু মানব জীবনপথের যে পরিসমাপ্তি মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেটাকে বরণ করেছেন কবি।
শনিবার ২২ শ্রাবণ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১ তম প্রয়ান দিবসে কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যোগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ক্লাব কার্যালয়ে কথা -কবিতায় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।
কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আসাদুল করিম মামুনের সভাপতিত্বে সাংবাদিক জিয়াউর রহমান জীবনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লেখক,গবেষক কেন্দুয়া সরকারি কলেজের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ বাবু রনেন সরকার।
কথা - কবিতায় আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম স্ব শরীরে কবিগুরু কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ী পরিদর্শন করেন এবং সেই সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেন, মহাকালের চেনাপথ ধরে প্রতি বছরই বাইশে শ্রাবণ আসে, এই বাইশে শ্রাবণে রবীভক্তদের এক মিলন মেলা বসে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়। রবীন্দ্র কাব্যসাহিতের বিশাল একটি অংশে যে পরমার্থের সন্ধান করেছিলেন, সেই পরমার্থের সংগে তিনি নীল হয়েছিলেন এদিন।
মূখ্য আলোচক কেন্দুয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাবু রনেন সরকার বলেন,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙ্গালী জাতির দিকনির্দেশক এক আলোকবর্তিকা। বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনে সব কিছুর সঙ্গেই একটু একটু করে মিশে আছেন রবীন্দ্রনাথ।
আলোচক নেহাল হাফিজ বলেন, রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে বাঙালি চিন্তার ভূগোল,ভাবের প্রকাশ,রস- আস্বাদন - কিছুই সম্ভব না। বাঙালি সত্তায় রবীন্দ্রনাথ সদা জাগ্রত।
এছাড়াও কবিগুরুর জীবনাদর্শ ও বিভিন্ন রচনাবলী নিয়ে আলোচনা করেন,কেন্দুয়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সভাপতি, লেখক,সাংবাদিক বাবু রাখাল বিশ্বাস, কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক, মোঃ জামিরুল হক, কেন্দুয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজল কুমার সরকার,বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বানু শুসেন সাহা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত কবিতার বই ৫২টি, উপন্যাস ১৩ টি,ছোটগল্পের বই ৯৫ টি,প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬ টি,এবং নাটকের বই৩৮ টি।
কবিগুরুর মৃত্যুর পর ৩৬ খন্ডে ""রবীন্দ্র রচনাবলী "" প্রকাশিত হয়। এছাড়া ১৯ খন্ডের রয়েছে ""রবীন্দ্র চিঠিপত্র ''।
১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, গগডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, শিক্ষক অনুকুল চন্দ্র সরকার, ইমরুল কায়েস তুহিন, দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ,ভোরের ডাক প্রতিনিধি আবুল কাশেম আকন্দ, গণকন্ঠ প্রতিনিধি সৈয়দ মোখলেছ- উজ- জামান, দৈনিক ডোনেট বাংলাদেশ প্রতিনিধি, আনোয়ার উদ্দিন হীরন, আনন্দবাজার প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান রাফিসহ সাহিত্যপ্রেমী ও গুণিজন।
-বাবু/ফাতেমা