শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫ ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫
ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই আঙুরীর পেশা
বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫৭ PM
বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আমিনপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বাবুর যৌন লালসার স্বীকার মা মেয়ে, মেয়ের আত্নহত্যা শিরোনামে বিভিন্ন  জাতীয় দৈনিকসহ বেশ কিছু স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ ও ঘটনার বাস্তবতা যাচাইয়ের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। 

নগরবাড়ী ও তার আশেপাশের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অভিযোগকারী আঙুরী একজন দেহ ব্যবসায়ী ও ব্লাকমেইলার। এলাকা সূত্রে জানা  যায়, আঙুরী চন্ডীপুর এলাকার আনসারের মেয়ে ও বসন্তপুর গ্রামের তোফাজ্জল এর স্ত্রী। সে বিয়ের পর থেকেই দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।  শশুর বাড়ীতে থেকেই নিয়মিত পতিতাবৃত্তি করার কারণে বেশ কয়েক বছর পূর্বে  প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করে এলাকাবাসী। তার  পর থেকে সে ঢাকায় অবস্থান করে দেহ ব্যবসা ও এই এলাকার সম্ভান্ত্র মানুষ জনকে ব্লাকমেইল করে অর্থ আদায় করাই তার পেশা।   

অভিযোগকারী আঙ্গুরীর ভাসুর  আনিছ (৫২) জানান, আমার ছোট ভাই মরহুম তোফাজ্জল (তোফা)’র সাথে আঙুরীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সে আমার ভাই এর উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে এমনকি সে বাড়িতে পরপুরুষ নিয়ে এসে দেহ ব্যবসা করতো। তার এমন কর্মকান্ড দেখে স্থির থাকতে না পেরে আমার ভাই আত্নহত্যা করে। আমার ভাই এর মৃত্যুর পর সে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। প্রকাশ্যে তার দেহ ব্যবসা চালাতে থাকে এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী তাকে এলাকাচ্যুত করে। পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য সুসমা রানী সাহা বলেন, আঙুরী ১ যুগ ধরে এলাকা থেকে বিতাড়িত। এর পুর্বে সে এলাকায় দেহ ব্যবসা করতো। সে আমার ভাসুর পুত্র সুমন ( কালা) কে তার শরীরের জাদুতে পাগল করে ব্লাকমেইল করেন।  কালার যখন অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয় তখন আঙুরী তাকে ব্লাকমেইল করে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে ও প্রকাশ্যে শারিরীক ভাবে লাঞ্ছিত করে যা সইতে না পেরে কালা (সুমন) আত্নহত্যা করে। নগরবাড়ী ঘাটের বিশিষ্ঠ কয়লা ব্যাবসায়ী রানা হাজী বলেন,আমি একজন কয়লা ব্যবসায়ী। ৩ বছর পুর্বে হেলাল দালালের মাধ্যমে আঙুরী আমার সাথে যোগাযোগ করে। সে জানায় রংপুরে তার দুইটি ভাটা আছে সে কয়লা নিবে। এ বিষয়ে ২-৩ দিন যোগাযোগের পর সে আমাকে ব্লাকমেইল শুরু করে। সে দাবি করে আমি তাকে বিবাহ করেছি আমার পুরো পরিবারকে সে উল্টাপাল্টা বলে ও মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে আমি ও আমার পরিবার তীব্র প্রতিবাদ করলে আঙুরী পিছু হাটতে বাধ্য হয়।

রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত এ এম শহিদুল্লাহর ছেলে গোলাম গওজ ( ৪০) বলেন, ২০১২-১৩ সালে কন্টাক্টারী নিয়ে ইমান হাজীর ভাই মরহুম ইলিয়াস এর সাথে আমার সমস্যা দেখা দিলে আঙুরীকে দিয়ে আমার নামে ধর্ষণ মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে মোহরী রফিকুল ইসলাম এর সহযোগিতায় আমি রক্ষা পাই। জাতসাখিনী ইউনিয়নের টাংবাড়ি গ্রামের সোহাগ হোসেন বিল্টু বলেন, প্রায় ১৫ বছর পুর্বে বন্ধু স্বপনের মাধ্যমে আঙুরীর সাথে আমার পরিচয়। স্বপনের সাথে আঙুরীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি স্বপন কে আঙুরীর ঘরে আটকিয়েছে। সেখানে গিয়ে মান বাঁচাতে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে স্বপনকে নিয়ে আসি। আর এ রকম একটা নষ্ট মহিলার সাথে বাবু ভাই কে জড়িয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের কে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে। বসন্তপুর গ্রামের আব্দুল আওয়াল (৬০) বলেন, আঙুরী একজন চিহ্নিত দেহ ব্যবসায়ী। সে যুবক দের তার শরীরের যাদুতে ভুলিয়ে ব্লাকমেইল করতো। সে খরিদ্দারদের নিজ ঘরে আটকে রেখে বিয়ের ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিত। বসন্তপুর গ্রামের রুস্তম বলেন, আঙুরী আমার কাছে চাঁদা দাবি করে না দিলে ধর্ষণ মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। বসন্তপুর গ্রামের মৃত ফজের শেখের স্ত্রী ডলি (৮০) বলেন, আঙুরীর শরীরের পশমের চেয়ে ভাতার বেশি ছিল। বসন্তপুর গ্রামের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মমতা (৫২) বলেন, আঙুরী একজন চিহ্নিত দেহ ব্যবসায়ী ও ব্লাকমেইলার।

এরকম একজন মহিলা কে ব্যবহার করে কারা একজন সম্মানিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে কলংকিত করছে তা উদঘাটনের দাবি জানান তিনি। আমিনপুর বেড়ার একাধিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে যে কেউ আসতে পারে, কল করতে পারে ও সেলফি তুরতে পারে। এরকম একটা ছবি দিয়ে কখনোও কারও চরিত্রে কলংক দেওয়া যায় না। আর দেড় মাস পূর্বে আঙুরীর মেয়ে আত্নহত্যা করেছে, থানায় ইউডি মামলা  হয়েছে। সেগুলো কে ইস্যু করে দেড় মাস পরে কার ইশারায় এই নোংরামোর সেই রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান তারা।  কাশিনাথপুর, আমিনপুর, নগরবাড়ি, বেড়াসহ পাবনা জেলার সচেতন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের দাবি একজন সম্মানিত জনপ্রতিনিধি কে লাঞ্চিত করতে যারা আড়াল থেকে কাজ করছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক।

বাবু/জেএম

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত