ময়মনসিংহের ত্রিশালে বড়মা-কানিহারী সড়কের বুদিরখালের উপর নির্মিত কালভার্টটির রেলিং না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে পথচারী ও যানবাহন। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা এলাকবাসীর।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, অনেক বছর আগে এ সড়কের বুদির খালের উপর কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। এ কালভার্টটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। নির্মাণের পর আর কোন সময় এর মেরামত করা হয়নি। কয়েক বছর ধরে কালভার্টের দুই পাশের রেলিং ভেঙ্গে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। দুই পাশের রেলিং না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে যানবাহনসহ সাধারণ মানুষকে। এতে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের ছনকান্দা এলাকার বুদির খালের উপর নির্মিত কালভার্টটির বেহাল দশা। কালভার্টটির দুই পাশের রেলিং উধাও। পাশেই কমিউনিটি ক্লিনিক। সারাদিন মানুষের আসা যাওয়া। ঝুঁকি নিয়েই রেলিংবিহীন কালভার্ট দিয়ে পারাপার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষসহ যানবাহন। কালভার্টের দুই পাশের সড়কটিও ভাল নয়। পিচ উঠে গর্ত হয়ে আছে। এ সড়ক দিয়ে অটোরিকশা, ভ্যান, সিএনজি, মটরসাইকেল ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। বড় যানবাহন চলাচলের নেই কোন উপায়। দুর্ঘটনার এড়াতে অটো রিকশার যাত্রী কালভার্টের একপাশে নেমে পায়ে হেটে খালি গাড়ি পাড় করে আবার গাড়িতে উঠছেন। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়েই রেলিং ভাঙ্গা কালভার্ট পার হচ্ছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এটি বহু বছর আগে নির্মিত। এখন কালভার্টটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় হরমুছ আলী, রওশনারা বেগম, স্বপ্না আক্তার বলেন, এ খালের উপর কালভার্টটি দিয়ে প্রতিদিন অনেক যানবাহন ও সাধারন মানুষ যাতায়াত করে। অনেক বছর ধরেই কালভার্টের দুই পাশের রেলিং ভাঙ্গা কেউ খোঁজ খবর নেয়না। ভাঙ্গা রেলিং দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় লাগে। বৃষ্টির দিন আসলে আরও বেশি সমস্যা হয়। যে কোন সময় একটু এদিক সেদিক হলেই গাড়ি খালের নিচে। এখানে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। যানবাহনও যাত্রী নামিয়ে পার করতে হয়। দিনের বেলা কষ্ট করে চললেও রাতে এখান দিয়ে যাতায়াত করা যায় না। কালভার্টে নেই আলোর কোন ব্যবস্থা। পুরোটাই ঘুটঘুটে অন্ধকার। বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগে সংস্কার করা জরুরি প্রয়োজন।
এ সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশা চালক হারেছ আলী বলেন, আমি প্রতিদিন এ রেলিং বিহীন কালভার্টের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করি। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ী থেকে নেমে পায়ে হেটে পাড় হয়। আসলে আমারও পাড় হতে ভয় করে। এই বুঝি স্লিপ করে নিচে পড়ে গেলাম। অনেকেই এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। অপরিচিত কেউ এ সড়কে আসলে বেশি বিপদে পড়েন। দিনের আলোতে কষ্ট করে চললেও রাতে কোন কিছু দেখা যায়না। তখন সমস্যাটা বেশি হয়। সড়কের অবস্থাও তেমন ভাল না।
এ সড়কে চলাচলকারী আছিয়া খাতুন বলেন, গাড়ীতে বসে রেলিং বিহীন কালভার্ট পার হলে ভয় লাগে। কখন যেন পড়ে যাই। তাই গাড়ী থেকে নেমে হেটে পার হচ্ছি পড়ে আবার গাড়ীতে উঠবো। এটা দিয়ে বাচ্চারাও স্কুলে আসা যাওয়া করে। আমরা ভয়ে থাকি কখন দুর্ঘটনা ঘটে। এটা সংস্কার দরকার। এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় কানিহারী ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ মন্ডলের সাথে মুঠোফেনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, কালভার্ট বা ব্রিজ নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমরা প্রপোজাল পাঠিয়েছি। এটা ফাইনাল হলে, প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করে আশা করি শিগগিরই এর কাজ শুরু করতে পারব।
বাবু/জেএম