বানিজ্যের কাজ খতিয়ে দেখতেই বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে নীলফামারী জেলার ডোমারের চিলাহাটি ও হলদিবাড়ী সীমান্তের রেলরুট পরিদর্শন করেছেন ভুটানের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল। ১৮ জনের এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন ভুটানের বিদেশ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান সেওয়াং লাদেন ও কর্মা সোশার।
তাঁদের সঙ্গে ওই দেশের পরিবহন দপ্তরের প্রধান সোনম চোফেলও ছিলেন। এদিন চিলাহাটি রেলওয়ে ভিআইপি রেস্ট হাউজের সম্মেলন কক্ষে একটি বৈঠক করেছেন তাঁরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক(এডিবি) এর কনসালটেন্ট ফিরোজ আহমেদ, রংপুর বিভাগীয় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর যুগ্ম কমিশনার মানস কুমার বর্মন, বাংলাদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান বানিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস, ডিআরএম সুফি নুর মোহাম্মদ, চিলাহাটি সীমান্ত রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল রহিম, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ডিএমই মিজানুর রহমান, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমিজ আলম প্রমুখ।
জানা যায়, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী আন্তর্জাতিক রেলরুট এবং বুড়িমারী-চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরে বাংলাদেশে পণ্য পাঠানোর জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সুবিধা পোর্টাল চালু করা হয়েছে। এই সিস্টেম কার্যকর রয়েছে ভুটানের ক্ষেত্রেও। সুবিধা পোর্টালের মাধ্যমে বাণিজ্য করতে গিয়ে কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে কি না বা হবে কি না এ বিষয়েও ভুটানের প্রতিনিধি দলের কর্তারা খোঁজ খবর নিয়েছেন। ভুটানের প্রতিনিধি দলের মনোভাব, বুড়িমারী ও চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়েও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য চলছে। এই বাণিজ্যে এবার রেলরুট যোগ করতে চাইছেন চিলাহাটি ও হলদীবাড়ি দিয়ে।
কারণ ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এর পাশাপাশি মোংলা সমুন্দ্র বন্দর ব্যবহার করতে চায়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে মোংলার সাথে রেলপথ সংযুক্ত হচ্ছে। ফলে মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে সরাসরি পণ্যবাহী ট্রেনে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলরুট দিয়ে পণ্য নিতে চায় ভুটান। যেহেতু ভুটানে রেলপথ নেই। তাই তারা (ভুটান) ভারতের আলিপুরদুয়ার, ডামডিম ও হাসিমারা ব্যবহার করবেন। সেখান থেকে বাংলাদেশ হতে আমদানিকৃত ও ভুটান হতে বাংলাদেশে রপ্তানীকৃত পণ্য ট্রেনে পরিবহন করতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হতেও পণ্য পরিবহনে ভুটান এই রেলরুটকেও বেছে নিতে চান।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর কনসালটেন্ট ফিরোজ আহমেদ বলেন, ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় উঠে এসেছে তারা পণ্য আমদানী রপ্তানীর ক্ষেত্রে রেল পরিবহনকে গুরুত্ব দিতে চায়। পাশাপাশি ভুটান বাংলাদেশের মোংলা সমদ্র বন্দরকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বানিজ্যিক কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ভুটানের পক্ষে বাংলাদেশ হতে পণ্য পরিবহনে রেলপথ ব্যবহার করতে চেয়েছে। এটি আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে এ মূহুর্তে ভুটান রেলপথে পণ্য পরিবহন চাইলে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেনে পন্য পরিবহন করতে হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০২৪ সালে ২০০ ওয়াগন আমদানী করতে যাচ্ছে। তখন আমরা আমাদের ওয়াগানে পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম হবো।
বাবু/জেএম