শনিবার ২৮ জুন ২০২৫ ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ২৮ জুন ২০২৫
বুশরার মায়ের দাবি
ফারদিনের সঙ্গে প্রেম ছিল না বুশরার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১০:১৪ PM

আলোচিত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের সঙ্গে চার বছরের সম্পর্ক থাকলেও প্রেম ছিল না বলে দাবি করেছেন গ্রেপ্তার আমাতুল বুশরার মা ইয়াসমিন।


কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের বয়লা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার নিজ বাড়িতে থাকেন আমাতুল বুশরার পরিবারের সদস্যরা। তার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সবুজ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। ২০১৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। মা ইয়াসমিন গৃহিণী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় আমাতুল বুশরা। বুশরার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে বাড়িটিতে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। বাসায় বুশরার ছোট বোন জিনান, তাহিয়া ও ছোট ভাই মোহাম্মদকে নিয়ে অবস্থান করছেন মা ইয়াসমিন। ৮ নভেম্বর বুশরার কল পেয়ে রাতে ঢাকায় গেছেন বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সবুজ। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।


বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে কথা হয় আমাতুল বুশরার মা ইয়াসমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, চার বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় আমাতুল বুশরা ও ফারদিন নূর পরশের। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা নিয়ে কথা হতো তাদের। এভাবেই তাদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের মধ্যে ফোনে ও ম্যাসেঞ্জারে নিয়মিত কথা হতো। তাও জানতো বুশরার পরিবার। তবে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না বলে দাবি করেছেন বুশরার মা ইয়াসমিন। বুশবার মা আরও বলেন, কিশোরগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ওয়ালীনেওয়াজ খান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন বুশরা। স্কুল ও কলেজে পড়ার সময়ই বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো বুশরা। সেই থেকেই যারা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বা ভালো তাদের সঙ্গে নিজে থেকেই যোগাযোগ রাখতো সে।


তিনি বলেন, ফারদিন নূর পরশের সঙ্গে ২০১৮ সালের শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি গ্রুপের মাধ্যমে পরিচয় হয় তাদের। আমরাও তাদের পরিচয়ের বিষয়টি জানতাম। পরিচয়ের পর থেকে ম্যাসেঞ্জার এবং মোবাইলে ফোনে বিভিন্ন সময়ে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে বুশরা ফারদিনের সঙ্গে কথা বলেই বিতর্কের অনেক বিষয়ে ভালো শিখেছে তাও আমাকে জানিয়েছিল। বুশরা গত বছরে ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার পর ফারদিনের সঙ্গে প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ হয় তার। এরপরে যতবার সাক্ষাৎ হয়েছে প্রতিবারই বাসায় ফিরে ফোনে মাকে জানাতো সে। বিশ দিন পূর্বে কিশোরগঞ্জের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল বুশরা। তখনও বাসায় ফারদিনের অনেক প্রশংসা করে গেছে সে। তার দাবি এমন একটি মধুর সম্পর্ক কোনোভাবেই হত্যাকাণ্ড হতে পারে না বলে দাবি তার। আর ফারদিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত নয় তার মেয়ে বুশরা।


বুশরার ছোট চাচা আমিনুল ইসলাম সোহেল বলেন, ফারদিনের সঙ্গে বুশরার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল তা পরিবারের সবাই জানতো। ৮ নভেম্বর রাতে বুশরাকে ডিবি কার্যালয় থেকে ফোন করা হলে প্রথমে এ বিষয়টি বাবাকেই জানায় বুশরা। আর সেই খবরেই বুশরার বাবা ঢাকায় গেছেন। সেই থেকে তিনি এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন। ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবের হয়েও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতো বুশরা। রামপুরার একটি ছাত্রী হোস্টেলে সহপাঠী অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে থাকতো সে। আমার ভাতিজি এমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে না। ফারদিন হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত হলে আসল খুনি বেড়িয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।


প্রঙ্গত, গত শুক্রবার ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার পর সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক জানান, ওই তরুণকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বুশরাকে রামপুরার ওই ছাত্রী হোস্টেলে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলায় বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।


বাবু/এসআর


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত