সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫ ৩০ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সোনাইমুড়ী কলেজের গাছ কাটলেন অধ্যক্ষ
সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৮:০৮ PM আপডেট: ০১.১২.২০২২ ৯:২৬ PM
সোনাইমুড়ী কলেজ আঙিনা থেকে কেটে নেয়া হয়েছে সব গাছ। গত শনিবার সকালে কলেজ অধ্যক্ষের নির্দেশে ছয় সাত জনের একদল লোক গাছগুলো কেটে নিয়ে যায়। এর আগে কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটার আবেদন করা হলেও জীব বৈচিত্র ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকার তখন অনুমতি দেয়নি। অথচ কোন অনুমতি ও বন আইনকে বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়ে বর্তমানে গাছ নিধন করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য গাছগুলো কাটার অনুমতি আনতে গাছের বিবরণ ও ছবিসহ একজন প্রতিনিধিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো হয়। তখন  মাউশির সরকারী কলেজ শাখার ৩০১ নম্বর কক্ষে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানিয়ে দেন গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা তাদেরও নেই। একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমতি ছাড়া কলেজের গাছ কাটা যাবে না। একই সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি উপজেলা ইউএনও বরাবরও পাঠায়। কিন্তু কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজনেও তখন গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়নি অথচ হঠাৎ করেই এখন কোন আইন বা নিষেধের তোয়াক্কা না করে গাছগুলো খেয়ালখুশি মতে কেটে ফেলছেন অধ্যক্ষ একেএম শফিকুর রহমান।  

সরকারের অনুমতি ছাড়া বন, সড়কের পাশের ও পাবলিক প্লেসের গাছ কাটলে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘বৃক্ষ সংরক্ষণ বিল, ২০১২’ আইন তৈরী করা হয়। দেশের জীববৈচিত্র, প্রতিবেশ ও পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারি জমিতে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ সংরক্ষণ করতেই এ বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনের ৪ ধারার ২ উপ-ধারায় বলা হয়েছে, সরকার যদি সংরক্ষণযোগ্য কোন গাছ কাটার অনুমতি দেয় তবে শর্ত হিসেবে প্রতি একটি গাছ কাটার বিপরীতে তিনটি গাছ লাগানোর শর্ত দিতে হবে। কিন্তু সোনাইমুড়ী কলেজের গাছ কাটার পর নতুন গাছ রোপন তো দুরের কথা বিষয়টি জানে না স্থানীয় বনবিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট অন্য কেউ।  

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ একেএম শফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এমপি সাহেবের সাথে কথা বলেছি, আমি ইউএনওকে জানিয়েছি। আপনার কিছু জানার থাকলে সামনাসামনি আসেন। আমি এভাবে কিছু বলবো না।’ 

এ বিষয়ে জানতে সোনাইমুড়ী উপজেলা বন কর্মকর্তা সামছুল কবির এর  সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমার জানা নেই। তবে যেহেতু ইউএনও স্যার রক্ষনাবেক্ষন কমিটি প্রধান ওনার সাথে কথা বলতে পারেন। কোন গাছ কাটার প্রয়োজন হলে আমরা তা যাচাই বাচাই করি এবং মূল্যনির্ধারণ করে দেই। আমাদের চিঠির মাধ্যমে জানাতে হয় তবে আমার জানামতে সোনাইমুড়ী কলেজ থেকে কোন চিঠি আসে নাই। কোথাও যদি গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে বা রাস্তার উপর পড়ে থাকে তাহলেও তা অনুমতি নিয়েই কাটতে হবে। তবে কোন সমস্যা না হলে গাছ কাটার দরকার নাই।’

এরপর আমরা কথা বলি সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন এর সাথে তিনি, বলেন, ‘গাছ রক্ষণাবেক্ষন কমিটির সভাপতি আমি তবে কলেজের বিষয়টি আমার জানা নেই। এটির আইন আলাদা এবং কলেজের বিষয়টি আমার জানা নেই।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত