প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো সৈকত নগরী কক্সবাজার৷
আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমন ঘিরে কক্সবাজারজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। নতুন রূপে সাজছে সৈকত নগরী কক্সবাজার।
পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো জেলা শহর। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কর্মীসভা করা হচ্ছে। সৈকত নগরীর রাস্তাঘাট সংস্কার, সড়কের পাশে থাকা দর্শনীয় স্থান ও বিভিন্ন স্থাপনা রঙিন করা হচ্ছে। বিরামহীনভাবে নগরীকে সাজানোর কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি দপ্তর৷
ওইদিন কক্সবাজারের ইনানীতে আন্তর্জাতিক নৌ-মহড়ার উদ্বোধন শেষে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফরটি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করছে। ইতিমধ্যে জনসভাস্থলের সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দিন-রাত্রি টানা চলছে সার্বিক প্রস্তুতির নানা কাজ। তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুনে নতুন রূপে সেজেছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, টানা ৫ বছর পর কক্সবাজারের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৈকত নগরীজুড়ে ব্যানার আর পোস্টার৷
দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে সৈকত নগরীজুড়ে পোস্টার-ব্যানার টানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে সৈকত নগরীর কলাতলী লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, ডলফিন মোড়, শহরের লালদিঘীর পাড়সহ সৈকত নগরীজুড়ে ব্যানার-পোস্টার।
কক্সবাজারজুড়ে মাইকিং করার পাশাপাশি নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করে লোকজনকে জনসভায় আসতে উদ্বুদ্ধ করছেন। পাড়া-মহল্লায় চলছে পথসভা ও নানা অনুষ্ঠান।
দলীয় নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা স্মৃতিময় করে রাখতে চান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কক্সবাজারের ইতিহাসে এটি হবে সবচেয়ে বড় সমাবেশ। যেখানে উল্লেখযোগ্য লোক সমাগম ঘটবে। বিপুল লোকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নগরী ও জেলায় বর্ধিত সভা করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ড এবং প্রতিটি ইউনিয়নে বর্ধিত সভা করা হচ্ছে। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা নিজ নিজ ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের নিয়ে যোগ দেবেন জনসভায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর এবারের জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দেশের অন্য এলাকার চেয়ে কক্সবাজারে বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, রেললাইন প্রকল্প, আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, মেরিন ড্রাইভ প্রশ্বস্তকরণ, সাবমেরিনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লেুাসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এলএমজি টার্মিনালসহ অসংখ্য মেঘা প্রকল্প।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম চৌধুরী জানান, শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে মানুষের সমাগম শুরু হবে। জেলার বিভিন্ন দূরের উপজেলা থেকে অনেকেই আগের দিন ৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার শহরে অবস্থান নেবেন। সভায় যাতে ৫ লাখ মানুষের সমাগমের অসুবিধা না হয় এজন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পৌর এলাকা জুড়ে সাজ-সাজ পরিস্থিতি চলছে। ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লাখের অধিক মানুষ যোগ দেবে। একই সঙ্গে রামু, ঈদগাঁও থেকে আসবে আরও দেড় লাখ মানুষ। প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে মানুষের নগরী হয়ে উঠবে কক্সবাজার।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল প্রকার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ কক্সবাজার এসেছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছরের বেশি সময়ের পর ৭ ডিসেম্বর আবার আসবেন তাই উৎসাহ-উদ্দিপনা দেখা দিয়েছে কক্সবাজারবাসীর মধ্যে।
-বাবু/এ.এস