নেক ও বদ আমল ছোট হলেও তা ছোট নয়, অনেক বড়। তাই কোনো পাপকে তুচ্ছ মনে না করা। অনুরূপ কোনো নেক কাজকেও তাচ্ছিল্য না করা উচিত। তবে সমাজে চলতে ফিরতে এমন কিছু বাক্য আমরা শুনে থাকি যা নেক কাজকে তাচ্ছিল্য করা বোঝায়। যেমন—কাউকে বলতে শোনা যায় মেসওয়াক ও তাসবিহ জপার আমল সবাই করতে পারে, কিন্তু সংগ্রামের ময়দানে সবাই আসতে পারে না। এভাবে কথার মাধ্যমে একটি নেক আমলের গুরুত্ব বোঝাতে আরেকটি আমলকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা অনুচিত। রাসুল (সা.) বলেন, কোনো নেক কাজকেই তুচ্ছ জ্ঞান কোরো না। এমনকি অপারগতায় তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাকেও। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৫১)
জীবন চলার পথে পথে, ঘরে-বাইরে ছোট ছোট পুণ্যময় এমন অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে, যা ক্ষুদ্র হলেও মানুষকে সফলতার পথে পৌঁছে দিতে পারে। আবার এমন অনেক ছোট পাপ রয়েছে, যেগুলো ক্ষুদ্র হলেও আগুনের ফুলকির মতো জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কেউ অণু পরিমাণ সত্কর্ম করলে সে তা দেখতে পাবে এবং অণু পরিমাণ মন্দ করলে সে তা-ও দেখবে।’ (সুরা : জিলজাল, আয়াত : ৭-৮)
সুতরাং হাশরের মাঠে হিসাব যখন ছোট-বড় সব কিছুরই হবে, তাই ছোট বিষয়কেও তাচ্ছিল্য করা কোনো সুস্থ বিবেকের কাজ হতে পারে না।
পার্থিব জীবনে অনেক ক্ষুদ্র বিষয় মানুষের জীবনকে মুগ্ধ ও আনন্দিত করে তুলছে, যা বড় বিষয় দিয়ে হচ্ছে না। রাসুল (সা.) আরো বলেন, ভালো কোনো কাজকেই তুচ্ছ মনে করবে না। সে কাজটি কাউকে এক টুকরা রশি, একটি জুতার ফিতা, তোমার পানির পাত্র থেকে পানিপ্রত্যাশী কারো পাত্রে সামান্য পানি ঢেলে দিয়ে হোক। অথবা মানুষের চলার পথ থেকে কষ্টদায়ক কোনো কিছু সরিয়ে দিয়ে, হাসিমুখে তোমার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তোমার ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সালাম দিয়ে, কিংবা পৃথিবীতে কোথাও কারো একাকিত্ব দূর করে দিয়ে হোক, কোনো কিছুকেই তুমি তুচ্ছ মনে করবে না। তোমার কোনো অন্যায়ের কথা জেনে কেউ যদি তোমাকে গালি দেয় আর তুমি জানো, তার মধ্যে এ দোষটি আছে, তখন তুমি তাকে গালি দেবে না; এতে তার প্রতিদান তুমি পেয়ে যাবে, আর তার গোনাহ তার কাঁধেই থাকবে। (মুসনাদে আহমাদ : ১৫৯৫৫)
আলোচ্য হাদিস থেকেও আমরা নেক আমলকে তুচ্ছ জ্ঞান না করার শিক্ষা পাই। এমন অনুচিত কাজ থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন!
-বাবু/এ.এস