লিওনেল মেসির সঙ্গে দেখা করার স্বপ্ন অনেকেরই। কতজনই বা পারেন এই স্বপ্ন পূরণ করতে। আর যিনি পারেন, তিনি কতটাই না সৌভাগ্যবান। হুয়ান পোলকান তেমনি সৌভাগ্যবানদের একজন।
পিএসজি তারকা মেসির সঙ্গে তিনি শুধু দেখাই করেননি, আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের বাসায় ঢুকেছেন এবং তার দেওয়া অটোগ্রাফ শরীরে ট্যাটুও করিয়েছেন। তবে এর আগে পোলকানকে দিতে হয়েছে ধৈর্যের পরীক্ষাও। মেসির বাসার সামনে ১০ ঘণ্টা বসে ছিলেন তিনি। ধৈর্যের পরীক্ষার একপর্যায়ে মেসি নিজে দরজা খুলে পোলকানকে বাসার ভেতরে নিয়ে যান। এমন খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইনফোবে। এ ছাড়া পোলকান নিজেও এ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। মেসির অটোগ্রাফ দেওয়ার ভিডিও এবং ছবি পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। পোলকান আর্জেন্টিনার ফুটসাল দলের খেলোয়াড়।
ইনফোবে জানিয়েছে, কয়েক মাস মেসির সঙ্গে দেখা করার এই পরিকল্পনা করেন পোলকান। সে জন্য প্রয়োজনে প্যারিসে গিয়ে দুই দিন থাকতেও রাজি ছিলেন তিনি। ইনফোবেকে পোলকান এ নিয়ে বলেছেন, ‘যাওয়ার আগে সবকিছু ঠিকঠাকমতোই হয়েছে। তার বাসার ঠিকানাটা ইন্টারনেটে অনেক খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। শেষ পর্যন্ত একজন হেয়ারড্রেসারের কাছে ঠিকানাটা পেয়েছি, যে প্যারিসেই থাকে এবং তার বাসায় গিয়েছিল। সে আমাকে ঠিকমতো জায়গাটা দেখায়নি। তবে বাসাটা কোথায়, তা বুঝিয়ে দিয়েছে। যখন তার বাসার সামনে পৌঁছাই, তখন সকাল ৮টা। বাসাটা খুঁজে পেতে ৪৫ মিনিটের বেশি লাগেনি।’ মেসির বাসার সামনে অপেক্ষা নিয়েও পোলকান বলেন, ‘অপেক্ষা করেছি ভালোবাসা থেকে। তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাটা মনের ভেতর পুষে রেখেছিলাম। সকাল ৯টা পর্যন্ত বসে থাকার পর তাকে অনুশীলনে যেতে দেখি। শুরুতে সে একা ছিল, দুপুরের দিকে একটি ছেলে এসে তার সঙ্গে যোগ দেয়।’ অপেক্ষার প্রথম কয়েক ঘণ্টা খুব দীর্ঘ মনে হয় পোলকানের কাছে।
কিন্তু লেগে থাকার ধৈর্যটা পেয়েছেন মেসিকে ভালোবেসেই। পোলকান বলেছেন, ‘দুপুরের দিকে সে ফিরে আসার পর ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারিনি। কিন্তু নিশ্চিত ছিলাম সে আমাকে দেখেছে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার স্ত্রী বাসা থেকে বের হন। গাড়ির জানালা খুলে তিনি আমাদের সঙ্গে খুব ভালোভাবে কথা বলেছেন এবং জানান যে, সন্তানদের আনতে যাচ্ছেন।’ এক পর্যায়ে হতাশ হয়ে পড়লেও হাল ছাড়েননি তিনি। শেষ পর্যন্ত আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মেসির বাসায় ঢোকার পরের ঘটনার ব্যাখ্যায় পোলকান বলেন, ‘বাসায় ঢোকার পর প্রথমে চোখে পড়েছে যে দৃশ্যটি, মেসি শর্টস ও স্যান্ডেল পরে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে হ্যালোও বলেছে। অবিশ্বাস্য মুহূর্ত। তাকে বলেছি, কতটা ভালোবাসি। একসঙ্গে ছবি তুলেছি।
আমার ফুটসাল ক্লাবের জার্সিতে তিনি অটোগ্রাফও দিয়েছেন। আমাকে বুকে টেনে নিয়েছেন এবং হাতের বাহুতে অটোগ্রাফও দিয়েছেন। তখন আমার হাত কাঁপছিল, এমনটা আগে কখনো অনুভব হয়নি। অটোগ্রাফটি হাতে ঠিকমতো দিতে মেসিই আমাকে শান্ত করেন।’ স্বাভাবিকভাবেই আর্জেন্টাইন মহাতারকার সামনে ফ্যানবয় হয়ে গিয়েছিলেন পোলকান, ‘লিও (মেসি) আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেটি বিশ্বকাপ জয়ের জন্য নয়। শৈশব থেকে যে স্বপ্ন দেখে আসছি, তা পূরণ করে আমাকে সুখী করার জন্য ধন্যবাদ। তোমার প্রতিটি ম্যাচেই আমার মুখে হাসি ফোটে। আমি ভাইরাল হতে চাই না। আমি সবাইকে জানাতে চাই মেসি কেমন, কতটা সরল, কতটা আন্তরিক।’ মেসির বাসা থেকে বের হয়ে আর্ক দে ত্রিয়োম্ফের পথ ধরেন পোলকান। মেসির অটোগ্রাফ শরীরে চিরকালের জন্য রেখে দিতে ট্যাটু করানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বাবু/পিকু