বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে থামিয়ে দিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। প্রত্যাশা ছিল, না হারালেও অন্তত অজিদের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবে ডাচরা, তবে হলো না কিছুই।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ পাত্তাই পায়নি নেদারল্যান্ডস। বরং বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জাই পেতে হয়েছে তাদের। অজিদের কাছে নেদারল্যান্ডস হেরেছে ৩০৯ রানে। আগে ব্যাটিং করে ৪০০ রানের পাহাড়সম টার্গেট ছুঁড়ে দেয় অজিরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯০ রানেই অলআউট হয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা পায় নেদারল্যান্ডস।
স্কোরকার্ড
৪০০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা নেহায়েত মন্দ হয়নি ডাচদের। দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’ ডড এবং বিক্রমজিৎ সিং শুরু করেছেন ভালোভাবেই। ৪ ওভারে রান উঠেছিল ৭ এর উপরে। তবে ওটুকুই ছিল বলার মত। ৫ম ওভারে ম্যাক্সকে সরাসরি বোল্ড করে ধ্বংসযজ্ঞের শুরু করেন মিচেল স্টার্ক। ৯ রান আর এক ওভার পর আবার উইকেটের পতন। ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত রানআউটে সাজঘরে ফেরেন বিক্রমজিৎ।
" align=
১০ রান পর আরও একবার উইকেটের পতন। এবার অধিনায়ক কলিন অ্যাকারম্যান ফিরে গিয়েছেন জশ হ্যাজেলউডের বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে। আর ৫৩ রানে নির্ভরযোগ্য বাস ডি লিড আউট হলে ডাচদের পরাজয় হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ম্যাচে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি কমলা শিবিরকে।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ডেভিড ওয়ার্নার
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বুধবার নেদারল্যান্ডসের বোলারদের নিয়ে যেন ছেলেখেলায় মেতেছিল অজি ব্যাটাররা। ডেভিড ওয়ার্নার ৮৯ বলেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। রান এসেছিল স্টিভেন স্মিথ এবং মার্নাস লাবুশেনের ব্যাটেও। তবে ম্যাক্সওয়েল ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। একের পর এক চার-ছয়ে ডাচ বোলারদের দুঃস্বপ্নই উপহার দিয়েছেন তিনি।
খুনে ব্যাটিং শেষে ম্যাক্সওয়েলের বুনো উল্লাস
ইনিংসের একেবারে শেষ দিকে ৪০ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। বাস ডি লিডের বলে ছয় মেরে করেন বিশ্বকাপের নতুন রেকর্ড। ভেঙ্গে দেন ১৮ দিন আগে গড়া এইডেন মার্করামের রেকর্ডকেও।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ডেভিড ওয়ার্নার আর মিচেল মার্শের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৩ বলে ২৮ রান।
সেঞ্চুরির পথে ওয়ার্নার
১৫ বল খেলে ৯ রান করা মার্শকে ফিরিয়ে অসি শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ফন বিক। তবে দ্বিতীয় উইকেটে দাঁড়িয়ে যান ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ। ১১৮ বলে ১৩২ রানের ঝোড়ো জুটি গড়েন তারা।
স্মিথ (৬৮ বলে ৭১) দেখেশুনে খেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাকে সাজঘরে ফিরিয়ে বড় জুটিটি ভাঙেন আরিয়ান দত্ত। এরপর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে ৭৬ বলে ৮৪ রান যোগ করেন ওয়ার্নার। লাবুশেন ৪৭ বলে ৭ চার আর ২ ছক্কায় ৬২ রান করে আউট হন।
সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ওয়ার্নারের উল্লাস
তবে ওয়ার্নার চলতি বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি। পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৮৫ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত করেন ১২৪ বলে ঝোড়ো ১৬৩।
এবার অসি ওপেনার সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন ৯১ বলে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তার ২২তম সেঞ্চুরি আর বিশ্বকাপে সবমিলিয়ে ষষ্ঠ।
বেস ডে লেডের করা ইনিংসের ৩৯তম ওভারে ওয়ার্নার সেঞ্চুরির করার পরপরই জশ ইংলিশ আউট হয়ে যান ১২ বলে ১৪ করে। ফন বিকের করা পরের ওভারে ওয়ার্নারও সেঞ্চুরির পর সাজঘরে ফিরে যান।
মাত্র ৪০ বলে ঝড়ো শতক তুলে নেন ম্যাক্সওয়েল
২৯০ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি হাঁকান ম্যাক্সওয়েল। ৪০ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন অসি এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত আউট হন ৪৪ বলে ১০৬ করে। দানবীয় ইনিংসে ছিল ৯ চার আর ৮টি ছক্কার মার।