কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ব্যাটে বলে কখনোই আধিপত্য বিস্তার করা হয়নি বাংলাদেশের। ব্যাট হাতে যেমন ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তেমনি ছিল একেবারেই নিরীহদর্শন বোলিং। একপেশে ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে বাবর আজমের দল।
টানা ছয় হারে বাংলাদেশের সেমিফাইনালের আশা পুরোপুরি শেষ। টুর্নামেন্টের বাকি থাকা তিন ম্যাচে নতুন শুরুর আশার কথা শুনিয়েছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নিজেদের সপ্তম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে উল্টো নিজেদের ব্যর্থতার ধারাবাহিকতাই ধরে রাখল বাংলাদেশ।
লক্ষ্য মাত্র ২০৫ রানের। দুই প্রান্ত থেকে আব্দুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন। ২১ ওভারে তারা তুলে ফেলে ১২৮ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরান শফিককে। ৬৯ বলে ৯ চার ও ২ ছয়ে ৬৮ রান করেন পাকিস্তানি ওপেনার, এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
বাংলাদেশি স্পিনার দ্বিতীয় উইকটে পান তার ষষ্ঠ ওভারে। মাত্র ৯ রান করে লং অনে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন বাবর আজম। ১৬০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়লো পাকিস্তানের। মিরাজ তার পরের ওভারে তৃতীয় বলে ফখরকেও আউট করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমকে আউট করেন আফ্রিদি। ৫ বলে শূন্য রান করে এলবিডব্লিউ হন তিনি। রিভিউ নিলেও আম্পায়ারস কলে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার বোলিংয়ে এসে এবার নাজমুল হোসেন শান্তকে আউট করেন আফ্রিদি। ৩ বলে ৪ রান করে ফরওয়ার্ড শর্ট লেগে দাঁড়ানো উসামা মিরের হাতে ক্যাচ দেন। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম হারিস রউফের শিকার হলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের।
২৩ রানে তিন উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের জুটিও ছিল দারুণভাবে। কিন্তু ৬ চারে ৬৪ বলে ৪৫ রান করে ইফতেখার আহমেদের বলে শট খেলতে গিয়েও ব্যাটের ফেস অফ করে দেন, এরপর মাথায় লেগে ক্যাচ যায় আগা সালমানের হাতে।
৬৪ বলে ৪৫ রান করে আউট হওয়ার পর প্রায় আধামিনিট একইরকমভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বিশ্বাসেই করতে পারছিলেন না লিটন, ছাড়তে চাইছিলেন না মাঠও। ৮৯ বলে ৭৯ রানের দুর্দান্ত এক জুটিরও অবসান ঘটে তাতে। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গী হন সাকিব আল হাসান।
শুরুতে কিছুতেই রান তুলতে পারছিলেন না তিনি। বহু চেষ্টার পরও দেখা মিলছিল না সিঙ্গেলসের। ওই চাপ কিছুটা পড়ে মাহমুদউল্লাহর ওপরও। তার স্ট্রাইক রেট কমে যায়, পরে হন আউট। আফ্রিদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৭০ বলে ৫৬ রান করেন তিনি।
সাকিব এরপর ব্যাটিংয়ে কিছুটা ছন্দ খুঁজে পান। ৫৩ বলে ২৬ রান করার পর ৩৭তম ওভারে ইফতেখার আহমেদকে টানা তিন বলে বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু ওই ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। হারিস রউফের বলে আগা সালমানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪ চারে ৬৪ বলে ৪৩ রান করে আউট হন তিনি।