ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে হাতে লাঠি নিয়ে বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে চাঁদাবাজীর সময় পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫০জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব-১৪’র একাধিক টিম জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব বলছেন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির অন্যতম কারণ হচ্ছে পরিবহনে চাঁদাবাজী। চাঁদাবাজী বন্ধে তাদের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও র্যাব জানিয়েছে।
বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে প্রায় ২০ হাজার বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহেন্দ্রসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এসব পরিবহন থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন টোকেনের মাধ্যমে লাঠি হাতে নিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে চাঁদা উত্তোলন করে থাকে। সড়কে চাঁদাবাজী নিয়ে চালকরা বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়।
সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের পর নবনির্বাচিত একাধিক সংসদ সদস্যও চাঁদাবাজি বন্ধে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। বিষয়টি ব্যাবের নজরে আসায় বুধবার সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নগরীর পাঁচটি স্পটে অভিযান চালিয়ে ৫০জন চাঁদাবাজকে হাতে-নাতে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার রশিদ বই, ৬৫ হাজার টাকা এবং লাঠি জব্দ করা হয়।
বুধবার বিকেলে র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজী বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। এছাড়াও পরিবহনে চাঁদাবাজী নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদও প্রকাশ হয়। যার প্রেক্ষিতে র্যাব নগরীর রহমতপুর বাইপাস মোড়, পাটগুদাম ব্রিজমোড়, শম্ভুগঞ্জ, মুক্তাগাছা এবং তারাকান্দার কাশিগঞ্জে অভিযান চালায়। এসময় হাতে-নাতে ৫০জন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়। পরিবহনে তাদের চাঁদাবাজীর কারণে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তাদের হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
তারা নামে-বেনামে চাঁদা তুলে কাকে দিচ্ছে কাদের ইশরায় হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদে বের করা হবে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পরিবহন চালকরা বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলেই তাদের আদালতে তোলা হবে।
টাউন হল মোড়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে অটোরিকশা চালক রাসেল হোসেন বলেন, চাঁদা উত্তোলনকারীদের ধরলে হবে না। এর পেছনে কারা আছে তাদের ধরে আইনের আওতায় আনতে হবে। টাউন হল থেকে জামালপুর যেতে আমাদের প্রায় ১০০টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। স্ট্যান্ডে জিবি দিতে হয় ১৪০টাকা। এমন অবস্থায় আমরা অতিষ্ঠ। র্যাব একটি ভালো কাজ করেছে। অনেক সময় চাঁদা না দিলে আমাদের মারধরেরও শিকার হতে হয়। আমরা এর একটি সুরাহা চাই।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে প্রতিমাসে ময়মনসিংহের পরিবহন সেক্টর থেকে কয়েক কোটি টাকা চাঁদাবাজী হয়। আর চালকরা চাঁদা দেওয়ার সুযোগ নিয়ে আইন ভেঙে সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া ভাবে যান পরিচালনা করায় প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।