নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় ক্ষেতের বোরো ধান কেটে নেওয়া ও বসতবাড়িসহ জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন সাজু আক্তার (৪৩) নামে এক নারী।
এ ঘটনায় স্থানীয় থানা পুলিশ জহুরা আক্তার (৫৫) ও মারুফা আক্তার (২৫) নামে দুই নারীকে গ্রেফতার করে শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে নেত্রকোনা আদালতে সোপর্দ করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে মামলাটি দায়ের করার পর ঘটনাস্থল থেকে ওই দুই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ ও মামলার বরাতে জানা গেছে, দিগদাইর বাঘপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মিয়ার স্ত্রী সাজু আক্তার ২০১৪ সালে তার বোন জহুরা আক্তারের কাছ থেকে কান্দিউড়া ইউনিয়নের জাফরপুর মৌজার ২৩৯নম্বর খতিয়ানের ৩৩নম্বর দাগে সাড়ে ১৩ শতাংশ ও একই মৌজার ১৭০নম্বর খতিয়ানের ৬৮৯নম্বর দাগে সাড়ে ১৪ শতাংশ জমি ও ঘরসহ বসতবাড়ি ক্রয় করেন। জমি-বাড়ি ক্রয় করার পর থেকে তাতে সাজু আক্তার ও তার ভাই হাইজুল মিয়ার পরিবার বসবাস করে আসছেন।
এরই মধ্যে প্রতিপক্ষের জহুরা আক্তার সম্প্রতি ঢাকা থেকে এলাকায় ফিরে এসে তার ছেলে সুমন মিয়াসহ তাদের লোকজনকে সাথে নিয়ে ওই জমি-বাড়ি জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সাড়ে ১৪ শতাংশ জমিতে আবাদকৃত বোরো ধান গত ১৩এপ্রিল সকালে জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যায়।
এ দিকে গত ১৫মে সকালে প্রতিপক্ষের লোকজন সাজু আক্তারের বাড়িতে গিয়ে বাড়িতে থাকা সাজু আক্তারের ভাই হাইজুল মিয়া ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে বসতঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে দিয়ে জমি ও বাড়িঘর দখলে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। পরে ঘটনার খবর পেয়ে জহুরা আক্তার ওই বাড়িতে ছুটে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে খুন জখমের হুমকি দেয়।
মামলার বাদী সাজু আক্তার বলেন, আমার স্বামীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী দিগদাইর বাগপাড়া গ্রামে। তাই আমরা বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকি। আমাদের জাফরপুর মৌজার জমি ও বাড়িতে আমার ভাই হাইজুল মিয়া তার পরিবার নিয়ে বাস করে। আমরাও মাঝে মধ্যে যাই। এই জমি ও বাড়িসহ জায়গা আমরা আমাদের বোন জহুরার কাছ থেকে দলিল রেজিস্ট্রি মূলে ক্রয় করে দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু তারা ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদেরকে উচ্ছেদ করে আমাদের জমি ও বাড়িঘর দখল করে নিতে চাইছে।
প্রতিপক্ষের জহুরা আক্তার বলেন, আমি ঢাকায় বাসাবাড়িতে কাজ করে এই ফসলি জমি ও বসতবাড়ির জায়গা কিনে ঘর করেছিলাম। কিন্তু আমি ঢাকায় থাকার কারণে এসব জমি-বাড়ি আমার বোন ও ভাইকে ভোগদখল করতে দিয়েছিলাম। আমি লেখাপড়া না জানায় এবং সহজ সরল হওয়ায় তারা আমার টিপসহি নিয়ে এখন বলছে আমার জমি ও জমিসহ বাড়ি নাকি তারা কিনে নিয়েছে। তাই আমি আদালতে একটি মামলা করেছি।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.এনামুল হক পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং দুজন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।