সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫ ৩০ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫
পাহাড়ি ঢলে সিলেটে আকস্মিক বন্যা
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪, ১:২৮ PM
পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কয়েকটি উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল। ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৯.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

পাহাড়ি ঢলে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

বাঁচার জন্য আকুতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্টও দিচ্ছেন অনেকেই। ইতোমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষ নানা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে মহাসড়কও, এতে করে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আকস্মিক বন্যায় পরিবার পরিজন, গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলাগুলোর কয়েক লাখ মানুষ।

ফেসবুকে জৈন্তাপুর উপজেলার ময়নারহা খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা সাজিদুর রহমান সাজন নামে এক যুবক লিখেন- ‘লাশ উদ্ধার অইমু হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না, হয়তো এইটা শেষ পোস্ট’—এর আগে রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমি দৌলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা দিলু মিয়ার পোয়া, বাড়ি ফেরিঘাট। আমরারে কেউ বাঁচাও, আমরার মরণ সামনে, কেউ বাঁচাও আমরারে, মা-ভাই লইয়া আটকি গেছি’। 

সাজিদুর রহমান আরও লেখেন, ‘অনেক স্রোতের কারণে কেউ উদ্ধারের জন্য আসতে পারছে না, সুন্দর এই ভুবনে বাঁচার অনেক ইচ্ছা।’

পরবর্তীতে মাঝরাতে ওই যুবক ফের দুটি ছবি দিয়ে লিখেন-আলহামদুলিল্লাহ প্রশাসন ব্যর্থ হয়ে, এলাকার ভাইয়েরা উদ্ধার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল ৯য়টা পর্যন্ত সিলেটের কানাইঘাট সুরমা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ২.০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ০ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার, জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ০ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার ও গোয়াইনঘাটে সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ০ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়ন, লেঙ্গুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলংয়ে প্লাবনের পরিমাণ বেশি হয়েছে। এই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে মোট ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রয়েছে। 

অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবন প্রবণ এলাকার জনগণকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। গতকাল সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

জৈন্তাপুর উপজেলায় নিজপাট লামাপড়া, বন্দরহাটি, ময়নাহাটি, জাঙ্গালহাটি, বড়খেলা, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ফুলবাড়ী, নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, লমানীগ্রাম, কাটাখাল, বাউরভাগ ও বাওন হাওরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত