রাতের আঁধারে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর শাহবাগের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের সাক্ষী প্রজন্ম চত্বরের স্থাপনা। এখন পর্যন্ত স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। কাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা বলছে, আজ রাতের মধ্যে ভাঙার কাজ শেষ হতে পারে।
গত রাতে স্থাপনাটি ভাঙার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, এস্কেভেটর দিয়ে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
আজ রবিবার (১৩ জুলাই) সরেজমিন দেখা যায়, প্রজন্ম চত্বরের স্থাপনাটি একপাশ থেকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শাহবাগের একাধিক চা দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাত ১২টার পরে বুলডোজার দিয়ে ভাঙা শুরু হয় স্থাপনাটি। কিন্তু কেন সেটি ভাঙা হয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য তারা জানেন না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শাহবাগ মোড়ে নির্মিত স্থাপনাটি ভেঙে দিচ্ছেন তারা। সেখানে নতুন করে স্থাপনা তৈরি হবে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিয়ে এখানে এই স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন। বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রথমে ওই জায়গা বরাদ্দ নিয়ে নিজ খরচে সেখানে এই স্থাপনা তৈরি করেন।
এটি তৈরির পর সেখানে বসানো ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে বিকট শব্দ আসার কারণে এবং অতিরিক্ত আলোতে মানুষের সমস্যা হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শাহবাগ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ স্ক্রিনটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানায়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে তিনি এটি সরাননি।
পরে সিটি কর্পোরেশন সেখান থেকে ডিজিটাল স্ক্রিনটি খুলে ফেলে। এরপর ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর বলেন, এটা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিষয়। যেহেতু তাদের আওতায়, তারা কেন ভেঙেছে; সেটা আমি জানি না। মধ্যরাতে তারা এটা ভেঙেছে। তার আগে আমাকে ইনফর্ম করা হয়, যাতে কেউ মব তৈরি করতে না পারে। কিন্তু কেউ বাধা দেয়নি, মবও তৈরি হয়নি। যতদূর মন্ত্রণালয় আমাকে জানিয়েছে, এখানে জুলাইকেন্দ্রিক একটা নতুন স্থাপনা তৈরি হবে।