বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার অন্যতম মদদদাতা বিশ্ববিদ্যালয়টির (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা, দর্শন বিভাগের তাওহীদ, ফার্মেসী বিভাগের আবুবকর সহ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে রফিক ভবনের কর্মকর্তাদের কক্ষ থেকে তাকে আটক করেন। পরে তাকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। তবে কেন তিনি এখানে এসেছিলেন সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি ।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা জানান, আমরা খবর পেয়ে এসে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের কর্মকর্তাদের রুমে পেয়েছি এবং আমরা চিনতে পেরেছি তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের মদদদাতাদের মধ্যে অন্যতম। তার নামে মামলা রয়েছে। এরপর আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি, বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে আটক করে আমাদের কাছে সোপর্দ করে দিয়ে যায়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। তিনি এখন আমাদের হেফাজতে আছেন। আশুলিয়া থানা যদি তাকে গ্রেপ্তার দেখায় তাও করতে পারে। তাছাড়া আমরাও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ তার বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
জানা গেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলা ও ১৭ জুলাই পুলিশি হামলার মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
গত ১৭ জুলাই বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথন ফাঁস হলে দেখা যায়, তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন ‘আরেকটু অপেক্ষা করুন রাজাকারদের পরাজয় আসন্ন।’শেখ হাসিনার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ফরিদ উদ্দিনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তার আটক হওয়ার খবর শুনে মিষ্টি বিতরণ করছে জাবির দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলে জানা যাই।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য নুরুল আলমকে প্রধান করে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম। মামলায় হামলার মদদ দেওয়ার অভিযোগে ফরিদ উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।