রাজবাড়ীর রাবেয়া ক্লিনিকে অপারেশনের পর ডাক্তারের অবহেলায় সোনালী নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত সোনালী রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহের মহিষবাতান এলাকার রাশেদের স্ত্রী।
এ ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা পরদিন আজ (শুক্রবার) সকালে ক্লিনিকে ভাংচুর চালিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ক্লিনিকের গেইটে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে মালিক পক্ষ।
জানা গেছে, ৩১ অক্টোবর বিকেলে রাবেয়া ক্লিনিকে দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি করানো হয় রাশেদের স্ত্রী সোনালীকে।
সোনালী'র বাবা আমিন শেখ জানান, বিকেলে ভর্তি করার পর রাত ১০ টার দিকে সিজার অপারেশন করেন ডাক্তার শাহনিমা নার্গিস । অপারশনের পর আমার মেয়েকে বেডিং এ দিয়ে যায়। পরে অবস্থা খারাপ হলে তারা জানায় রক্ত লাগবে। তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। এরপর আমার মেয়ের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। পরে ক্লিনিকের লোকজনই রাতে রাজবাড়ী ক্লিনিকের এম্বুলেঞ্চ এনে বলে আপনার মেয়েকে ফরিদপুর নিয়ে যেতে হবে। তখন ডাক্তার বলে শ্বাস কষ্ট হইছে ফরিদপুর নিয়ে যান। পরে রাত আড়াইটার দিকে ফরিদপুর নিয়ে গেলে মেয়েকে অক্সিজেন দেওয়া হয় ফজরের আজানের সময় মেয়ে মারা যায়।
রাবেয়া ক্লিনিকের গাঈনী ডাক্তারের অবহেলায় আমার মেয়ে মারা গেছে বলে দাবী করেন নিহতের বাবা আমিন শেখ। থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন বলে জানান তিনি।
নিহতের স্বামী রাশেদ জানান, আমি টাঙ্গাইলে বাংলালিংক এর কোম্পানীতে চাকুরি করি। আমার স্ত্রীর আগে একটা মেয়ে সন্তান নাম রাইসা। রাইসার বয়স পাচ বছর । মাদ্রাসায় পড়ে। দ্বিতীয় সন্তানের জন্য রাবেয়া ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অপারেশনের আগে আমার স্ত্রী বলে একটা রোগীর অপারেশন শেষ হলেই আমার অপারেশন হবে । এরপর যখন অপারেশনের সময় হয় , তখন আমার স্ত্রী হেটেই অপারেশনের রুমে যায়। সুস্থ্য মানুষ ছিল, কোন সমস্যা ছিল না। অপারেশনের পর মেয়ে বেচে থাকল কিন্তু তার মা বেচে নেই। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে, আমি কার কাছে অভিযোগ করব ।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক শাহনিমা নার্গিস বলেন, রোগীর অপারেশনের পর শ্বাস কষ্ট দেখাদেয়। রক্ত প্রয়োজন ছিল। তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। রোগী অপারেশনের পর বমি করে দেয়। ধারণা করছি হয়তো অপারেশনের আগে রোগী কিছু খেয়েছিল। অক্সিজেন দেওয়ার পর রোগীর মুখ দিয়ে খাবার চলে আসে আর সেটা ফুসফুসে ঢুকে যায়। পরে বাধ্য হয়েই আমরা ফরিদপুরে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে রাবেয়া ক্লিনিকের মালিক আব্দুর রাজ্জাক লিটনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।