মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
এখনও ছাপানো শুরু হয়নি মাধ্যমিকের ‘নতুন পাঠ্যবই’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৪৯ PM আপডেট: ১৮.১২.২০২৪ ৭:২৩ PM
প্রাথমিকের বই ছাপানোর কাজ চললেও মাধ্যমিকের বইয়ের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়ার ‘আশার বাণী’ শোনালেও সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে পাঠ্যবই মুদ্রণ তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

সংস্থাটি এখন বলছে, ৪০ কোটি ১৬ লাখ বইয়ের সবগুলো জানুয়ারির শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন তুলে ধরে ছাপাখানা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেব্রুয়ারির আগে বই সব শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া কঠিন হবে। এজন্য শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন, পাণ্ডুলিপি দেরিতে পাওয়াসহ নানা কারণ তুলে ধরেন তারা। এতে করে বছরের প্রথম মাসেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার যে প্রচলন ছিল বিগত বছরগুলোতে তাতে এবার ছেদ পড়তে যাচ্ছে।

ছাপাখানা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ফেব্রুয়ারির আগে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়া যাবে না বলে ধারণা পাওয়া গেছে। বই পরিমার্জন হয়ে ছাপাখানায় যেতেই পাঁচ মাস দেরি হয়েছে এবার। রাজধানীর কয়েকটি ছাপাখানা ঘুরে নিশ্চিত হওয়া গেছে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ চললেও মাধ্যমিকের বই ছাপার কাজ শুরুই হয়নি।

এমন প্রেক্ষাপটে বছরের শুরতেই শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না বলে স্বীকার করেছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান। তিনি বলেন, “বই পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হলেও তা ফেব্রুয়ারিতে যাবে না। আশা করছি, ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”

নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে পুরনো শিক্ষাক্রমে ফেরার ঘোষণা আসে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন। এনসিটিবি বলেছিল, ২০১২ শিক্ষাক্রমের বইগুলো পরিমার্জন শেষে ছাপানো হবে এবং রীতি অনুযায়ী জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।

সাধারণত জুনে নতুন বছরের বইগুলোর পাণ্ডুলিপি ছাপাখানায় পাঠানো হয়। কিন্তু ৫ অগাস্টের পটপরিবর্তনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া ‘অভিজ্ঞতা নির্ভর শিক্ষাক্রম’ বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে ঘোষণা দেয়। ফলে এক যুগ আগে ২০১২ সালে প্রণীত শিক্ষাক্রমের বই ‘ঘষে-মেজে’ নভেম্বরে প্রেসে পাঠানো শুরু হয়।

গত কয়েক বছর পাঠ্যবইয়ের একাংশ ভারতেও ছাপা হত। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের বাস্তবতায় এবার শুধু দেশি ছাপাখানাগুলো বই ছাপার কাজ করছে। ছাপাখানা মালিকদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের বইয়ের কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে তদারকি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পেতেই দেরি হয়েছে। এরপর কাগজ সংকট, বিদ্যুৎ না থাকা এবং ব্যাংক ঋণ না পাওয়াসহ কয়েকটি কারণে ছাপার কাজে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আনোয়ার হোসাইন বলেন, “আমরা এখনও তদারকি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মাধ্যমিকের বই ছাপার অনুমোদন নিতে পারিনি। কাজ যে করব সারাদিন বিদ্যুৎ থাকে না। রাতের দিকে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। আমরা ব্যাংক লোন নিয়ে কাজ করি। কিন্তু এবার লোন পেতেও ভোগান্তি হচ্ছে। এরপর রয়েছে কাগজ সংকট। মাধ্যমিকের বইয়ের কাজ সবগুলো প্রেস একসঙ্গে শুরু করতে চাচ্ছে। তাই এ কাজের জন্য যে কাগজ দিতে হবে সেটির সংকট দেখা দিয়েছে।”

কবে নাগাদ সব বইয়ের কাজ শেষ হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আসলে থিউরিটিক্যালি জানুয়ারিতে কাজ শেষ হবে বলা গেলেও বাস্তবতা কঠিন। সব বইয়ের কাজ শেষ হতে জানুয়ারি মাস চলে যাবে। তাই ফেব্রুয়ারির আগে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।”
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত