বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাপড়ি কর্তৃক 'পর্যায়ক্রমে ভেজানো শুকানো পদ্ধতিতে (এডব্লিওডি) ধানচাষ (এডব্লিওডি) প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রকল্প অবহিতকরণ সভাটি পাপড়ি প্রধান কার্যালয় উপজেলার নারায়ণপুরে অবস্থিত প্রশিক্ষণ কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় পাপড়ির নির্বাহী পরিচালক আবু বাছেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাসুদ রানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, নারায়ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার কাজল। এছাড়াও উপকারভোগী কৃষক, সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং রায়পুরা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক এ কে এম সেলিম, আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি হারুনুর রশিদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
পাপড়ি কর্মকর্তা জাকিউল আলম ভুইয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাহী পরিচালক আবু বাছেদ।তিনি প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো মাসুদ রানা পাপড়ির ক্ষুদ্রঋণ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের প্রশংসা করে এই প্রকল্পের কাজের সাথে তাঁর পূর্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেকোনো সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান পর্যায়ক্রমে ভেজানো শুকানো পদ্ধতিতে ধানচাষ পদ্ধতির সুফল তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, জাপানি উন্নয়ন সংস্থা Share the Planet Association, Japan এবং Creattura, Japan এর আর্থিক সহযোগিতায় গত ০১ ডিসেম্বর ২০২৪খ্রি, থেকে "Craettura AWD/JCM (পর্যায়ক্রমে ভেজানো শুকানো পদ্ধতিতে ধানচাষ) Project in Narsingdi" শীর্ষক প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাপড়ি সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের অধীনে রায়পুরা ও বেলাব উপজেলার পাঁচটি গ্রামের ২৫৪ জন কৃষকের ৫৪৯ টি প্লটে এ পদ্ধতিতে ধান চাষ শুরু হয়। খালিয়াবন্ধের চরের মোট ৫১.৩ হেক্টর জমি ব্যবহার করা হয়। এডাব্লিওডি পদ্ধতিতে ধান চাষের মূল লক্ষ্য হলো- পানির অপচয় রোধ করা, উৎপাদন খরচ কমানো এবং মিথেন গ্যাস হ্রাস করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এই প্রকল্পের অধীনে আগত কৃষকরা নতুন পদ্ধতিতে ধান চাষে ব্যাপক সফলতা আশা করছেন এবং পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের বাহিরে থাকা সকল কৃষকদের প্রশিক্ষণের আহ্বান জানান।
এডব্লিডি পদ্ধতির সুবিধাগুলো হলো
১ম পদ্ধতি সঠিক সময়ে জমিতে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে, যা ধানের উৎপাদনশীলতা ১৫-২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে তুলতে পারে। ধীরে ধীরে জমি শুকিয়ে তারপর আবার পানি দেওয়ার ফলে সেচের পানির প্রয়োজন প্রায় ৩০-৪০% পর্যন্ত কমে যায়।পানির ব্যবহার কমার পাশাপাশি সেচ ও জমি প্রস্তুতিতে খরচও কম হয়।কম পানি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ বা ডিজেলের খরচও কমে যায়। AWD পদ্ধতিতে জমি শুকানোর কারণে ধানক্ষেতে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে, যা পরিবেশের জন্য ইতিবাচক। নিয়ন্ত্রিত পানি ব্যবহারের ফলে মাটির পুষ্টি উপাদান বজায় থাকে এবং মাটির ক্ষয়ক্ষতি কমে যায়।