৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মামলা, গ্রেফতারের ভয়ে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার তোপের মুখে জনপ্রতিনিধিরা গা-ঢাকা দিয়েছে।
জনপ্রতিনিধিদের শুন্যস্থানে বেশির ভাগ এলাকায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হলেও বেলকুচি উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়নি এখনও।
ইতোমধ্যেই এনায়েতপুর থানায় ১৫ পুলিশ হত্যা মামলা সহ একাধিক মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ এবং বেলকুচির ছয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে মামলা হওয়ায় নেতা-কর্মীসহ চেয়ারম্যানরা লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যায়। ফলে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া দুই ইউনিয়ন বাদে বাকি ৪টি ইউনয়ন বেলকুচি সদর, দৌলতপুর,রাজাপুর ও বড়ধুল ইউনিয়নে এখনও প্রশাসক নিয়োগ না দেয়ায় এই ইউনিয়ন গুলোর নাগরিকরা দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সরেজমিনে ৪টি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায় চেয়ারম্যান গণের কক্ষগুলোতে দরজায় তালা ঝুলছে। সেবা বঞ্চিত একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বেলকুচি উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং বেলকুচি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহাম্মদ আলী আকন্দের স্ত্রী রাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোছাঃ ছনিয়া সবুর পলাতক থাকায় রাজাপুর ইউনিয়ন
পরিষদে সেবা নিতে এসে সেবা না পেয়ে অভিযোগ করে রাজাপুর উত্তর পাড়া নিবাসী আল মাহমুদ মন্ত্রী বলেন, রাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছনিয়া সবুর বেলকুচি উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি এবং তার স্বামী আওয়ামীলীগের ভাইটাল নেতা হওয়ার কারণে বিরোধী মত দমন এবং বিএনপি জামায়াতের নেতা-কর্মীদেরকে নির্যাতনে সরাসরি ভূমিকা রাখার কারণে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। মামলার কারনে চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন। ফলে আমার মতো অসংখ্য মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সেবা গ্রহিতাও একই অভিযোগ করেছেন। একই চিত্র অপর ৩ ইউনিয়নেও।
বেলকুচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর্জা সোলায়মান হোসেন, বড়ধুল ইউপি চেয়ারম্যান আছির উদ্দিন মোল্লা এবং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী এবং সাবেক বেলকুচি পৌরসভা মেয়র বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাসের ছেলে লাজুক বিশ্বাস সহ আওয়ামীলীগ নেতাদের নামে মামলা হওয়ায় সটকে পড়েছেন তারা। আওয়ামীলীগ আমলে বিএনপি জামায়াতের নেতা-কর্মীদের অমানবিক নির্যাতন, দখল, টেন্ডার, নিয়োগ ও দরবার সালিশে বাণিজ্য সহ বিভিন্ন কুকর্মের অভিযোগ এসব চেয়ারম্যানদের প্রতি। ৫ আগষ্ট পরবর্তী প্রায় ৬ মাস মামলা হয়।
এপর্যন্ত আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানদের পদে টাকার বিনিময়ে টিকিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। তবে উক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বেলকুচি উপজেলার বিএনপির সদস্য সচিব বনি আমিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পতিত আওয়ামী লীগের বর্তমান কিংবা সাবেক সরাসরি পোস্ট ধারী। ৫ আগষ্টের আগে ও পরে তাদের নামে জ্ঞাত-অজ্ঞাত নামীয় একাধিক মামলা রয়েছে। এ কারণে তারা গ্রেফতার ভয়ে পলাতক রয়েছেন। ফলে এসব ইউনিয়নের প্রান্তিক সেবাগ্রহিতারা বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা থেকে। এসব ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলার নির্বাহী অফিসারকে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এখনও কেনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কেন তা বোধগম্য হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, সেবা বঞ্চিত বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।