টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার রায় রোববার ঘোষণা করা হবে। এ রায়ের মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগে রাজনীতির গতিপথ অনেকটা নির্ধারণ হবে। এ নিয়ে জেলা জুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা ও সমীকরণ।
জানা যায়, বহুল আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার রায় হবে রবিবার। এতে আলোচিত খান পরিবারের সাবেক এমপিসহ চার সন্তান আসামি রয়েছেন। তাদের সাজা না হলে আবার দলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে বলে মনে করছেন রাজনীতি অঙ্গনে। গত ২৬ জানুয়ারি এই মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সব যুক্তিতর্ক শেষ করে বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান মামলার রায়ের তারিখ দেন।
২০১৩ সালে ১৮ জানুয়ারিতে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের লাশ তার নিজ এলাকা কলেজ পাড়ায় থেকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনা ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ সন্দেহভাজন আনিসুল এবং মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন।
আদালতে দুজনের চাঞ্চল্যকর জবানবন্দিতে খান পরিবারের চার ভাইয়ের নাম উঠে আসে। সেই মামলার আসামি ১৪জন এরমধ্যে খান পরিবারের বড় সন্তান ২০১২ সালে ঘাটাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত আমানুর রহমান খান রানা।
আরেক আসামী তার ছোট ভাই সহিদুর রহমান খান মুক্তি। তিনিও ২০১১ সালে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র হিসাবে নির্বাচিত ছিলেন। অপর আসামী আরেক ছোট ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন। তিনি ব্যবসায়িক নেতা ছিলেন। সর্বশেষ আসামী ছোট ভাই সানিয়াত খান বাপ্পা। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকাদ্দেস বলেন, খান পরিবারের সন্তানদের সাজা হলে তাদের রাজনীতিতে আর কোন প্রভাব পড়বে না। এদিকে তাদের প্রভাব না পড়ায় টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিও যতসই করতে পারবে না।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, ফারুক হত্যা মামলার রায়ের মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইলে আগামী দিনের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নির্ভর করছে। তারা মনে করছেন এই মামলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির গতিপথ অনেকটাই নির্ভর করছে রায়ের উপর।
তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পলাতক রয়েছে। এখনও যদি খান পরিবারের সন্তানদের উপর জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের ডাকে নেতাকর্মীরা একত্র হবে। তাই আগামী দিনে টাঙ্গাইলের রাজনীতি নির্ভর করছে তাদের সাজার উপর। খান পরিবারের কোন সাজা না হলে পুনরায় আওয়ামী লীগের কান্ডারী হিসাবে দায়িত্বভার নিতে পারবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে ২৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দী, জেরা ও কয়েকজন আসামিসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আদালতকে শোনানো হয়েছে।
এ বিষয় নিহত ফারুক আহমেদের ছেলে মজিদ আহমেদ সুমন বলেন, মামলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আসামিরা বিঘ্ন ঘটাতে মরিয়া হইয়া পড়ছে । তারা চায় যে কোন মূল্যেই এই মামলা থেকে খালাস পেতে।
তিনি আরো বলেন, এই মামলায় আদালতে অভিযোগ গঠন, সাক্ষী গ্রহণ পর্যায়ে আসামিরা বিচার প্রক্রিয়ায় নানাভাবেই বিঘ্ন ঘটানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইন সঠিক পথে চললে আশা করি আসামীদের শাস্তি হবেই।