খালে একটি ভাসমান এক্সক্যাভেটরে লোহার শিট দিয়ে বানানো হয়েছে অস্থায়ী চলার পথ। ওই শিটের ওপর বিছানো হয়েছে লাল রঙের কার্পেট। সেখান থেকে কার্পেট উঠে এসেছে সড়কে।
অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা সড়ক থেকে ওই লালগালিচা বিছানো পথে হেঁটে নামলেন খালের ওপর ভাসমান এক্সক্যাভেটরে। উপদেষ্টাদের নিয়ে এক্সক্যাভেটরটি কয়েকবার খাল থেকে মাটি তুলে পাড়ে নিয়ে রাখল। এভাবে উদ্বোধন হল ঢাকার খাল সংস্কার কাজ।
আজ রোববার ঢাকার মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশনের রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ সিটির কাছে বাউনিয়া খালে দেখা গেল এমন দৃশ্য।
এসময় একজন সাংবাদিক পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে বলেন, “আগে দেখতাম মেয়ররা এমন ধুমধাম করে উদ্বোধন করতেন। সেখানে লালগালিচা থাকত না, কিন্তু আজ উপদেষ্টারা খালে নামলেন লালগালিচার ওপর দিয়ে।”
উত্তরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “ওটা তো অবশ্য আমি দেখিনি। ওটা অবশ্য আমি খেয়াল করিনি, আপনি খেয়াল করেছেন?”
লালগালিচা বিছানোর কারণ জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বলেন, “ডিএনসিসি বিষয়টির একটি ব্যাখ্যা দিচ্ছে।” পরে সংবাদমাধ্যমে একটি প্রেস নোট পাঠায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
প্রেস নোটে বলা হয়, রোববার মিরপুরে বাউনিয়া খালের প্রান্তে খাল সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া শেষে অতিথিরা ভাসমান এক্সক্যাভেটরে ওঠেন। ভাসমান এক্সক্যাভেটর কোনো স্থায়ী পন্টুনে নয়, একটি অস্থায়ী স্থানে রাখা হয়েছে। এক্সক্যাভেটরে ওঠার রাস্তাটি অনেক ঢালু ও কাদা-মাটির এবং এক্সক্যাভেটরের মেঝেটি পিচ্ছিল। এ কারণে অতিথিদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য এবং চলাচল এলাকা দৃষ্টিগ্রাহ্য করতে একটি লাল রঙের কার্পেটের মত ম্যাট ব্যবহার করা হয়েছে।
সিটি করপোরেশন বলছে, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক লাল গালিচা নয়, বরং শুধুমাত্র নিরাপত্তার স্বার্থে রাখা একটি ব্যবস্থা। এখানে কোনো ধরনের অপব্যয় বা অতিরিক্ত শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্দেশ্য নেই। যেহেতু ভাসমান এক্সক্যাভেটরে ওঠানামার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ, তাই ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা শহর ও চারপাশের খাল, জলাশয়ের কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঢাকা শহরে 'ব্লু নেটওয়ার্ক' তৈরির জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে।