বৃহস্পতিবার ৭ আগস্ট ২০২৫ ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ৭ আগস্ট ২০২৫
খুলনায় বিএনপির দুই গ্রুপের পৃথক বিজয় সমাবেশ
খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ৮:০৫ PM
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের আসার আহ্বান জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, নির্বাচন ঘোষণার পর কেউ কেউ বলেন-পিআর না হলে নাকি নির্বাচন হতে দেবেন না। সাড়ে ১১ কোটি ভোটার পিআর চেনে না। যারা বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। আমরা কী দেশ স্বাধীন করি নাই। আমরা তাদের উদ্দেশে বলব নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে আসুন, জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় যাবেন, ভোট না দিলে বিরোধী দলে বসবেন। অযথা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবেন না। যদি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন ৭১’র মতো জবাব পাবেন। আগামী নির্বাচন আমি-ডামির হবে না, দিনের ভোট রাতে হবে না। নির্বাচন ছাড়া এদেশে সমৃদ্ধ গণতন্ত্র ও অর্থনীতি আসবে না। 

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার বিকালে নগরীর শিববাড়ি মোড়ের জিয়াহল চত্বরে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিজয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আহমেদ আজম খান আরো বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১০ বছর নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি যেমন দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তেমনি এদেশের ফ্যাসিবাদী বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে পেরেছিলেন। তার নেতৃত্বে সম্মিলিতভাবে এদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিতভাবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান ফ্যাসিবাদী শাসনকে থামিয়ে দিতে পেরেছে। তিনি ছিলেন গণঅভ্যূত্থানের মহানায়ক। আমরা মুক্ত হতে পেরেছি। এই মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম এদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আর এ কারণেই বিএনপি যৌক্তিক সংষ্কার শেষে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। গত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এবার জনগণ ভোট চায়, জনগণের ভোটের সরকার চায়। গণতন্ত্র চায়, জনগণের ক্ষমতায়ন চায়, সমৃদ্ধ অর্থনীতি চায়। বিশ্বের বুকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চায়। 

তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা উঠলেই ২/১টি রাজনৈতিক দল তারা নানা তালবাহানার কথা বলে। কেউ বলে সংষ্কার শেষ করতে হবে। কেউ বলে বিচার শেষ করতে হবে। কেউ বলে এই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। আবার কেউ বলে পিআর ছাড়া নির্বাচন হবে না। তারা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। একেকজন একেক কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন, বিএনপি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যারা আমাদের মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছে; মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে- সেই ধর্মব্যব্যবসায়ীরা পিআর পদ্ধতি চাইছে। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস্য। লড়াই কিন্তু শেষ হয়নি। পতিতরা দিল্লীতে বসে ষড়যন্ত্র করে আসতে চায়, কিন্তু জনগণ হতে দেবে না। 

তিনি আরো বলেন, ৯০’র গণঅভ্যুত্থান ও ৯৬ সালেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্য নির্বাচন দিয়েছিল। কিন্তু এবার আমরা সময় দিয়েছি। যাকে মৌলিক সংস্কার শেষ করতে পারে। ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশন ঘোষণা চূড়ান্ত করছে। বিএনপি এতে সহমত প্রকাশ  করেছে। যা আগামী দিনের গণতন্ত্র, স্বচ্ছ সংসদ কার্যকর করবে। 

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু,খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, রেহেনা আক্তার, সৈয়দা নার্সিগ আলী, ফরিদ আহমেদ মোল্লা প্রমুখ। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ ও মাসুদ পারভেজ বাবু। 

বিএনপি নেতারা খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, খুলনা খুনের নগরীতে পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। অবিলম্বে খুন, চুরি, ছিনতাই, মাদক বন্ধ করতে হবে। 

সমাবেশ শেষে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে যশোর রোড ও ফেরিঘাট হয়ে খানজাহান আলী রোড ধরে রয়্যাল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

অপরদিকে একই সময়ে নগরীর তেঁতুলতলা মোড়ে পৃথক বিজয় সমাবেশ করেছে সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর অনুসারী বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, এড. ফজলে হালিম লিটন, মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, ইকবাল হোসেন খোকন, মেহেদী হাসান দিপু, নিজাম উর রহমান লালু, অ্যাডভোকেট গোলাম মওলা, আনোয়ার হোসেন, সাদিকুর রহমান সবুজ, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, ইউসুফ হারুন মজনু, কাজী শফিকুল ইসলাম শফি, রফিকুল ইসলাম শুকুর, শামসুজ্জামান চঞ্চল প্রমুখ। 

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত