টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলতি বছরে যমুনা চরাঞ্চল সহ উপজেলায় পাট চাষের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলায় ২ হাজার ৯'শ ১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯'শ হেক্টর। গত বছর ২ হাজার ৮'শ ১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও এবছর আরো ১০৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে চলতি বছরের বন্যায় উপজেলার যমুনা চরাঞ্চলে বেশ কিছু পাট পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে চরাঞ্চলের বেশ কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর।
সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দাসী হাটে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকেরা কাকডাকা ভোরে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পাট গোবিন্দাসী হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসতে শুরু করেন। সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যানে হাটে নিয়ে যান। হাটে প্রতি মন পাট বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায়।
গাবসারা গ্রামের পাট চাষী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর আমাদের চরাঞ্চলে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। পাট আবাদে খরচ ও ঝুঁকি অনেক কম এবং পাটের দাম অনেক ভালো পাচ্ছি।
গোবিন্দাসী হাটে পাট বিক্রি করতে আসা কৃষক রহিম মিয়া বলেন, আজকে গোবিন্দাসী হাটে পাটের বাজার মোটামুটি ভালো। প্রতি বিঘা পাট চাষে প্রায় ৮/১০ হাজার টাকা খরচ হয়। এবছর পাটের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১০/১২ মন পাট হবে। তাতে বিঘায় ২৫/৩০ হাজার টাকা লাভ থাকবে। এবছর পাটের বাজার ভালো পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি।
পাট বিক্রি করতে আসা কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, আজকে আমি ৮ মন পাট হাটে নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে একটু নিম্নমানের পাট ৩৬০০ টাকা করে বিক্রি করেছি এবং বাকি ৬ মন ভালো মানের পাট বিক্রি করেছি ৩৮০০ টাকা করে। এবছর পাট আবাদ করে আমরা অনেকটা লাভবান হয়েছি।
হাটে আসা পাটের পাইকার (ক্রেতা) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, পাটের আরোদ মালিকদের রেটে বিভিন্ন হাট থেকে আমরা পাট কিনছি। বর্তমানে আমরা ভালো মানের প্রতি মন পাট ৩৮০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকা এবং একটু নিম্নমানের পাট ৩৪০০ টাকা থেকে ৩৬০০ টাকায় কিনতেছি। তবে যমুনা তীরবর্তী গোবিন্দাসী হাটে ভালো মানের পাট বেশি আমদানি হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর যমুনা চরাঞ্চল সহ উপজেলায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে পাট বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রদর্শনী, মাঠদিবস ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের আধুনিক পাট উৎপাদন কলাকৌশল সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় এবছর ২ হাজার ৯'শ ১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯'শ হেক্টর। এবছর পাটের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় কৃষক অনেক লাভবান হবে। এজন্য আগামীতে আরো বেশি জমিতে পাটের আবাদ হবে বলে আশাবাদী।