ধবধবে সাদা পালক, হলুদ ঠোঁট আর পা দেখতে রাজহাঁস মনে হলেও এগুলো চীনের বেইজিং জাতের হাঁস। আর এই হাস পালনে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে এক যুবকের। খামার থেকেই প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন তিনি। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই নিচ্ছেন হাঁস পালনের উদ্যোগ।বলছিলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার থানাপাড়া এলাকার রশিদুল ইসলামের কথা।
একসময় তিনি করতেন সাইকেল মেরামতের কাজ করতেন রশিদুল। করোনাকালীন সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়ায় এমনকি করোনাকালীন সময়ে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগি পালন করতে গিয়ে পড়েন লোকসানে। এরপরই শুরু করেন হাঁস পালন।
প্রথমে ১০০টি হাঁস দিয়ে শুরু করে খামার। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে কমপক্ষে ৪০০ বেইজিং হাঁস। প্রতিদিন খামার থেকে ২৭০ থেকে ২৮০টি ডিম সংগ্রহ করেন তিনি। বাড়িতেই হাঁসের ডিম ফোটানোর জন্য বসিয়েছেন ইনকিউবেটর (মেশিন)। বেইজিং জাতের সেই ছানাগুলো জেলাসহ সারা দেশে সরবরাহ করছেন তিনি। প্রতিটি ডিম বিক্রি করেন ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে আর বাচ্চা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
তিনি বলেন, প্রথম যখন হাস পালন শুরু করলাম। সবাই রাজাহাস মনে করতো। কিন্তু রাজাহাসের তো দাম অনেক বেশি। সেই তুলনায় এটার দাম অনেক কম।বেইজিং হাঁসকে সাধারণত ধান, গম, ভুট্টা, এবং অন্যান্য শস্য খাওয়ানো হয়। এছাড়াও, বাজারের হাঁসের খাবারও ব্যবহার করা যেতে পারে।খামার থেকে আয়ের ব্যয়ের খরচের ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ২০০ বাচ্চার দাম হয় প্রায় ২২ হাজার টাকার মতো। আর খরচ হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এত লাভ আসে ২০ হাজার টাকার ওপরে।
হাঁস পালন করে যেন খামারিরা লাভবান হতে পারেন, সেজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকেও দেয়া হচ্ছে নিয়মিত পরামর্শ। জেলার কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডা. দেবেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, খামারি সবাই স্বাবলম্বি হতে চায়। সেজন্য আমরা সবাইকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এমনকি প্রান্তিক পর্যায়েও আমাদের দলের মানুষেরা কাজ করে।বেইজিং জাতের হাঁস হাঁস মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এবং অল্প সময়ের মধ্যে ভালো ওজন হয়। বেইজিং হাঁসের মাংস বেশ সুস্বাদু এবং বাজারে এর চাহিদা রয়েছে। তাই, বেইজিং হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।
রশিদুলের হাঁসের খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই ঝুঁকছেন বেইজিং জাতের হাঁস পালনে। তার কাছ থেকে হাঁসের বাচ্চা কেনার পাশাপাশি নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় পরামর্শও।এ জাতের হাঁস তিন পদ্ধতিতে পালন করা যায়। আবদ্ধ, আংশিক আবদ্ধ ও খোলা পদ্ধতি। আবদ্ধ পদ্ধতির চেয়ে আংশিক আবদ্ধ বা খোলা পদ্ধতিতে এই হাঁস চাষ করলে খরচ কম লাগে এবং বেশি লাভবান হওয়া যায়। তাই এ হাঁসপালনে পরামর্শ নিতে এসেছেন কলেজ ছাত্র কুঞ্জনগরের সজিব ও শাহিন।