সীমান্ত এলাকা কক্সবাজারের উখিয়ায় চলছে রোহিঙ্গা অপরাধচক্র। শরণার্থী ক্যাম্পের সীমানা ছাড়িয়ে তারা এখন বসবাস শুরু করেছে ক্যাম্পের বাহিরে ভাড়া বাসায়৷ যেখান থেকে করছেন ইয়াবা কারবার, অপহরণ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের নানামুখী অপরাধ।
দীর্ঘদিন ধরে এমন তথ্য ছিল র্যাব ১৫ এর কাছে৷ যারই ধারাবাহিকতায় র্যাবের একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে উখিয়া থেকে ১৮ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
সোমবার ১০ নভেম্বর গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক৷
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া বালুখালী মরা গাছতলানামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ভাড়া বাসায় অবৈধভাবে অবস্থানরত ১২ পুরুষ ও ৬ নারী রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র বলছে, ক্যাম্পের ভেতরে অপরাধ দমনের কড়াকড়ি বাড়ায় অনেক রোহিঙ্গা এখন আশ্রয় নিচ্ছে লোকালয়ের ভাড়া বাসায়। সেখান থেকে তারা তৈরি করছে নতুন অপরাধ নেটওয়ার্ক, গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে উখিয়া-টেকনাফের নানা এলাকায়।
এসব চক্রের সঙ্গে যুক্ত কিছু রোহিঙ্গা স্থানীয় মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে গড়ে তুলেছে মাদক-অপহরণ-চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট।
ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী এলাকার স্থানীয়রা জানান, এসব রোহিঙ্গা রাতের অন্ধকারে ইয়াবা পাচার, নারী ও শিশুর অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, এমনকি পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের মতো কর্মকাণ্ডেও যুক্ত। কেউ বাধা দিলে হামলার শিকার হতে হয়।
রোহিঙ্গা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পের বাইরে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার র্যাব প্রশাসন। বিশেষ করে যারা ভাড়া বাসায় থেকে অপরাধ করছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রিত রয়েছেন ৩৩টি শরণার্থী ক্যাম্পে। সীমিত সুযোগ-সুবিধা, কর্মসংস্থানের অভাব এবং অপরাধচক্রের টানে অনেকে ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসছে লোকালয়ে। ফলে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট অপরাধ এখন বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।