আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি মঙ্গলবার পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি ও মনোনয়ন বঞ্চিত স্নেহাংশু সরকার কুট্টির কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে সেখানে ‘ঠান্ডা পরিবেশ’ নজর কাড়ে, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী শহরের শের-ই-বাংলা সড়কে নিজ বাসভবনে পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে কুট্টির অফিসে পৌঁছান আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তবে সেখানে দেখা যায়, তাঁকে গ্রহণ করার মতো কেউই ছিলেন না। কয়েক মিনিট গাড়িতেই বসে থাকার পর তিনি অফিসে প্রবেশ করেন। অফিসে ঢুকেও পরিস্থিতি বদলায়নি। তাঁকে বসানোর জন্য সম্মানজনক কোনো আসনও ছিল না। উপস্থিত নেতারাও স্বতঃস্ফূর্ত আচরণ করেননি। ফলে পুরো পরিবেশ ছিল অস্বস্তিকর ও অনানুষ্ঠানিক। এমন অস্বস্থিকর পরিবেশে খুব বেশি সময় নেতাকর্মীদের নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী অবস্থান করেন নি। তবে তিনি যখন কুট্টি সরকারের অফিস থেকে বের হন তখনও তাকে বিদায় দিতে কুট্টি সরকার গ্রুপের কোন নেতাকর্মী এগিয়ে আসেনি।
সাংবাদিকরা উভয় নেতার যুগ্ম ছবি তুলতে চাইলে অফিসের কয়েকজন দায়িত্বশীল জানান, আমাদের মিটিং চলছে, সাংবাদিকরা বাইরে গেলে ভালো হয়। এমন পরিস্থিতিতে মুহূর্তেই বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়। কারণ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী নিজেই সাংবাদিকদের চা খাওয়াতে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। সাক্ষাতে দুই নেতার বক্তব্যও ছিল সংক্ষিপ্ত ও শীতল। আলোচনায় মিল বা সৌহার্দ্যের বিশেষ কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
এ সময়কার ভিডিও লাইভ সম্প্রচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে নানা আলোচনা শুরু হয়। অনেকে মন্তব্য করেন মনোনয়ন গেলেই কি নেতার সম্মান শেষ?, বিএনপির ভেতরে শীতল যুদ্ধ চলছে!
মঙ্গলবার সকালে আলতাফ হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে বলেছিলেন, আমি মনোনয়ন পাওয়ার পর যে তিন জন মনোনয়ন চেয়েছেন তাদের মধ্যে মোস্তাক আহম্মেদ পিনু এবং এডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন এর সাথে কথা বলেছি। আজ বেলা ১২ টায় কুট্টি সরকারের অফিসে যাব তার সাথে স্বাক্ষাত করতে, আপনারাও আমার সাথে যাবেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির মনোনয়ন পরবর্তী এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি নির্বাচনী মাঠে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বিশেষত জেলাজুড়ে ঐক্য ধরে রাখা দলের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
যদিও আলতাফ হোসেন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ নেতারা প্রকাশ্যে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন, তবে ঘটনাটি সম্পর্কে নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোকষ্ট স্পষ্ট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন -এই অবস্থার সমাধান না হলে নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়া কঠিন হতে পারে।
এ বিষয় জানতে চাইলে আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নির্বাচনী প্রধান সমন্বায়ক মাকসুদ আহম্মেদ বায়জিদ পান্না বলেন, যা হয়েছে তা আপনারা সাংবাদিকরা নিজ চোখেই দেখেছেন। সামনে নির্বাচন, এসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতে চাচ্ছি না। আশা করছি সামনের দিন গুলো সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিএনপির পক্ষে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবো।