মূল বেতনের ২০ ভাগ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ শিক্ষক কর্মচারীদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন এবং হামলাকারী পুলিশদের বিচারের দাবিতে আক্কেলপুরে মানববন্ধন হয়েছে।
রবিবার (৯ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে আক্প্রকেলপুর মডেল সরকারি প্রাথিমক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল ফজল মোহাম্মদ রায়হান এর নেতৃত্বে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষকরা। দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় ও শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিও শুরু করেছেন উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
এর আগে শনিবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম বিসর্জন’ কর্মসূচিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে বহু শিক্ষক আহত হন।
প্রধান শিক্ষক আবুল ফজল মোহাম্মদ রায়হান বলেন, আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, অথচ আমাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সরকারের এমন উদাসীনতা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন করছি না—শুধু আমাদের প্রাপ্য অধিকার চাইছি। অথচ শাহবাগে আমাদের ওপর যে পুলিশি হামলা হয়েছে এর মধ্যে অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল কাদের সহ ৪ জন শিক্ষকের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। আমরা এর বিচার চাই এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, আমাদের তিন দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করে কর্মবিরতি অবসানের সুযোগ করে দিন।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই হিসাবে মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি আছে পরীক্ষার। এমন সময়ে শিক্ষকরা দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নামায় এই উপজেলায় ৬৯ টি প্রাথমিক স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে করে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে আরও শিক্ষক বলেন, ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধি, দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না। শিক্ষক সমাজকে অবমূল্যায়ন করে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।
অভিভাবক সিরাজুল, বিকাশ, বিষু ও সুজনসহ অন্যরা জানান, বছরে এক-দু’বার শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থে হঠাৎ করে ক্লাস বন্ধ করে আন্দোলনে নেমে পড়েন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমাদের সন্তানরা। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন উদাসীনতা কোনোভাবেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় নয়। দাবি-দাওয়া থাকতে পারে, তবে তা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না করে করা উচিত।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের আমি শ্রেণিকক্ষে ফিরে গিয়ে পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কর্মসূচি বা মানববন্ধন করতে হলে তা যেন শ্রেণিকাজ শেষে সম্পন্ন করা হয়।