গাজীপুরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বাংলাদেশে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে "বাংলা ভাষা দিবস" পালনের উদযাপনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৪টায় গাজীপুর মিডিয়া সেন্টারে বাংলা ভাষা আন্দোলন পরিষদ, সাহিত্য অমনিবাস ও গাজীপুর মিডিয়া সেন্টরের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন বাংলা ভাষা আন্দোলন পরিষদের সভাপতি আতিকুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি ও সাংবাদিক মোহাম্মদ আহসান হাবীব।
সেমিনারে গবেষণা তথ্য উপস্থাপন করেন বাংলা ভাষা দিবস বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ও সাহিত্য অমনিবাসের সাধারণ সম্পাদক সাবা বিনতে মুরতাজ। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ১১ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ পালিত হতো। ১৯৫৬ সালে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেলেও ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহিদ দিবস হিসেবে সরকারি ছুটি দেওয়ার পর ভাষা দিবস হিসেবে পালনের ঐতিহ্যটি পাকিস্তানি ব্যুরোক্রেসির জটিলতায় হারিয়ে যায়।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা ভাষা দিবস বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জুলীয়াস চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের মূল প্রেরণা ছিল বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, কিন্তু স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরও বাংলা ভাষা রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। রাষ্ট্রভাষা বাংলা সেই পাকিস্তান আমলে অর্জিত হলেও, স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বস্তরে বাংলা আজও চালু করা গেলো না। এমনকি, যে ভাষার জন্য এত বড় নজিরবিহীন সংগ্রাম, সেই বাংলা ভাষার সম্মানে একটি বিশেষ দিন নেই।’
সেমিনারে আলোচনা করেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. নাসিমুল বারী, টঙ্গী সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলাম, ভাষা শহীদ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সাহিত্যক মুকুল কুমার মল্লিক, পূবাইল আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান আবুল হেসেন চৌধুরী, কোনাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক শীমা রানী মন্ডল, সাংবাদিক ও অভিনেতা মো. মজিবুর রহমান রানা গাজী, সুর তরঙ্গ’র চেয়ারম্যান সামান আলী, দিগন্ত থিয়েটারের চেয়ারম্যান সৈয়দ আতিক, চন্দ্র বিন্দু থিয়েটারের চেয়ারম্যান নাদিম মন্ডল, দশ দিগন্ত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম।
সেমিনারে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।