জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়সহ দেশের গোটা উত্তরাঞ্চলে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে শীত ও শীতের তীব্রতা। সেই সঙ্গে একদিকে বাড়ছে গরীব অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ-কষ্ট আর অপরদিকে বাড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুদের শীতজনিত নানা ধরনের রোগ বালাই। তবে শীত ও শীতের তীব্রতা বাড়লেও গোটা উত্তরাঞ্চলের কোথাও এখনো সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে শুরু হয়নি শীতবস্ত্র বিতরণ।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকেই গোটা উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৬ টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে। সকাল থেকে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশার আস্তরণ দেখা গেছে।
দিনাজপুর জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন জানান, ভোরের দিকে আকাশ পরিষ্কার থাকায় রাতের সঞ্চিত ঠান্ডা জমে থাকে। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে টানা ঠান্ডা বাতাস আসায় দিনের শুরুতেই শীতটা বেশি অনুভূত হয়। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায়। সকাল ৬টায় সেখানে তাপমাত্রা নেমে আসে মাত্র ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন। শীতের প্রভাবে তেতুলিয়া সহ পুরো উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতের দাপট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে-খাওয়া দিনমজুররা। ভোরে কাজের সন্ধানে বের হলেও ঠান্ডা কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে শ্রম দিতে কষ্ট হচ্ছে তাদের। অনেকেই কাজ শুরু করার আগে চায়ের দোকানে গরম চা খেয়ে শরীর গরম করছেন।
হিলি রেলস্টেশন এলাকার দিনমজুর ছামেদ আলী বলেন, সকাল হইলেই হিম বাতাস লাগে। হাত-পা জমে যায়। কাজ শুরু করতে গেলে হাত শক্ত হয়ে আসে। ঠান্ডায় কাজও কমে গেছে। আমরা তো দিন এনে দিন খাই, যেদিন কাজ পাই না, সেদিন ঘরে খাবারও থাকে না। আরেক দিনমজুর রফিকুল ইসলাম জানান, ভোরে বের হতে ভয় লাগে। শীত অনেক বেশি। কিন্তু না বের হইলে চলবে না। যে টাকা পাই তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলে। শীত বাড়লে আমাদের কষ্টও বাড়ে।
শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন পোহানোর দৃশ্য মিলছে। বাজার ও রিকশা গ্যারেজগুলোতে ভোর থেকেই শ্রমজীবী মানুষজন ভিড় করছেন শরীর গরম করতে।