রবিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৫
সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে উত্তম আচরণের নির্দেশ চট্টগ্রামের নবাগত ডিসির
জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৩১ PM

চট্টগ্রামের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা ইউনিয়ন পরিষদে আগত সাধারণ জনগণের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ ও প্রত্যাশিত সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “পারফরম্যান্স নির্ধারিত হয় মানুষের প্রত্যাশা দ্বারা”— অর্থাৎ জনসাধারণের চাহিদা যতটা পূরণ করতে পারবেন, সেই অনুযায়ী কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপির সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অর্ধ-বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

সভাটি অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সম্মেলন কক্ষে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোঃ শরীফ উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে গ্রাম আদালতের মামলার নিষ্পত্তি–সংক্রান্ত পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হলে জেলা প্রশাসক বলেন, “আমি এভাবে পারফরম্যান্স বিচার করি না। পারফরম্যান্স নির্ধারিত হয় মানুষের প্রত্যাশা দ্বারা। আমার নাগরিকদের প্রত্যাশার কতটা পূরণ করতে পারলেন, তার ওপরই আপনাদের কর্মদক্ষতা নির্ভর করে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা পরিবারে বাবা, সন্তান, স্বামী—বিভিন্ন ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করি। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে দায়িত্বে গাফিলতি অপ্রত্যাশিত। দায়িত্ব যথাযথভাবে না পালন করার কারণেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আমাদের প্রতি আস্থা কমে গেছে।”

নবাগত ডিসি আরও বলেন, “আপনার কাছে যে ব্যক্তি সেবা নিতে আসবে, তার সমস্যা সমাধান করতে পারেন বা না-ও পারেন—কিন্তু ভালো আচরণ করতেই হবে। ব্যস্ততা থাকতে পারে, সীমাবদ্ধতাও থাকতে পারে, তবু নাগরিকের কথা শুনতে হবে।”

তিনি উল্লেখ করেন,“সরকার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আপনাদের সেই চেয়ারে বসিয়েছে। সেই সময় সেবা প্রদান না করলে দায়িত্ব পালনই হলো না।”

ডিসি জানান, “চট্টগ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ ইউনিয়নে বর্তমানে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। অধিকাংশ চেয়ারম্যান ৫ই আগস্টের পর এলাকা ছেড়েছেন। কেন এমন হলো, সেটাও ভাবার বিষয়।”

তিনি কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামনে আসন্ন নির্বাচনে “জাতিকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার” প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইপসা’র সহকারী পরিচালক ফারহানা ইদ্রিস। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক ফরিদুল আলম।

সভাপতির বক্তব্যে মোঃ শরীফ উদ্দীন বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ মাঠ পর্যায়ে সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিষ্ঠান। জনগণের জন্য সেবা পরিবেশ আরও উন্নত করা জরুরি। ছোটখাটো অপরাধ ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে চেয়ারম্যানদের আইনগত ক্ষমতা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”

জানুয়ারি থেকে অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৯১টি ইউনিয়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্পের জেলা ম্যানেজার সাজেদুল আনোয়ার ভূঁঞা। পরে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কর্ণফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব কান্তি রুদ্র, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম,ছদাহা ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল আবছার, লেলাং ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খায়রুল আসলাম প্রমুখ। 

সভায় ১৫টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৯১টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারীরা উপস্থিত ছিলেন।







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত