বরগুনার তালতলীতে নৌবাহিনীর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করেছে নৌবাহিনী। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা দৈনিক কালবেলা পত্রিকার তালতলী উপজেলা প্রতিনিধি নাঈম মৃধা মোটরসাইকেল ফেলে কৌশলে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় একটি মাদকদ্রব্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ছোটবগী চরপাড়া এলাকায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। পরে পুলিশ ও নৌবাহিনীর যৌথ টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নৌবাহিনী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছোটবগী চরপাড়া এলাকায় সাংবাদিক নাঈম ইসলাম হাইরাজ মৃধা ও মাদক ব্যবসায়ী সরোয়ার তালুকদার (৩২) ইয়াবা ক্রয়–বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে—এমন গোপন সংবাদ পেয়ে নৌবাহিনীর একটি সশস্ত্র দল দ্রুত অভিযান চালায়। এসময় সরোয়ার তালুকদারকে হাতেনাতে আটক করা হয় এবং তার কাছ থেকে ৩২ পিস ইয়াবা, মাদক লেনদেনের ৩ হাজার ১'শ টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের সময় পরিস্থিতি বুঝে সাংবাদিক পরিচয়ধারী দৈনিক কালবেলার তালতলী প্রতিনিধি নাঈম ইসলাম হাইরাজ মৃধা পালিয়ে যান এবং ঘটনাস্থলে নিজের ব্যবহৃত দৈনিক কালবেলা স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল (বরগুনা হ-১১-৭৬৫২) ফেলে যান। পরে নৌবাহিনী মোটরসাইকেলটি জব্দ করে।
নৌবাহিনী জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সরোয়ার তালুকদার স্বীকার করেছেন যে—সে নিয়মিত সাংবাদিক নাঈম মৃধার কাছে ইয়াবা সরবরাহ করত। নাঈম স্থানীয় আরও কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করেন বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। পরে রাত দেড়টার দিকে সরোয়ারকে নৌবাহিনী থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এই ঘটনায় সরোয়ার তালুকদারকে প্রধান আসামি, নাঈম মৃধাকে ২ নম্বর আসামি এবং আসলামের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাঈম মৃধা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি নিয়মিত মাদক সরবরাহে জড়িত ছিলেন। সাম্প্রতিক অভিযানে তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে।
আটক সরোয়ার তালুকদার জানান, সন্ধ্যার দিকে সাংবাদিক নাঈম আমার বাড়িতে গিয়ে আমাকে খুঁজেছিলেন ইয়াবা ক্রয় করার জন্য। আমাকে না পেয়ে আমার ভাইয়ের মাধ্যমে ফোন করায় আমি রাস্তায় আসলে নাঈমের কাছে ইয়াবা দেওয়ার সময় আমাকে হাতেনাতে আটক করে নৌবাহিনী। এ সময় মোটরসাইকেল রেখে নাঈম ও আসলাম পালিয়ে যান। গত দুই-তিন দিন ধরে নাঈম আমার কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করছিলেন।
তালতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) বলেন,নৌবাহিনী আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। ইয়াবাসহ একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনায় সাংবাদিক নাঈমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাঈমের বিরুদ্ধে তালতলী থানায় এর আগেও একটি মাদক মামলা রয়েছে। তিনি আরো বলেন বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।