দেশের সবচেয়ে বড় সবুজ বনাঞ্চল এবং ঐতিহ্যবাহী শত বছরের পাহাড়ী গাছ বাগানের ভেতরে অবৈধ বালু উত্তোলন ও ড্রেজার মেশিন জব্দে অভিযানের ব্যাপক সফলতা কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের৷
এ ছাড়া ২০১৩-১৪ সাল থেকে এ যাবৎ কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন ১০টি রেঞ্জের ১৮টি বনবিটে ১৪৮৫ জন উপকারভোগীর মাঝে লভ্যাংশের ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে বনায়নের গাছ বিক্রি করে অর্জিত হয় প্রায় ২০ কোটি টাকা।
বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকারের দায়িত্বকালে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে শুধু এই কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগে ৫৫ জন উপকার ভোগীর মাঝে প্রথম অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়৷ ২০২১-২২ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা বেশী অর্জন হয়েছে এ বনবিভাগের৷
অনুসন্ধানের তথ্যমতে, গত ২১-২২ অর্থ বছরে জবর দখলকৃত ৫০০/৪০.১৭ একর বনভূমি উদ্ধার করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপন করে বাগান সৃজন করা হয়৷ ২১-২২ অর্থ বছরে সুফল প্রকল্পের আওতায় অতিদরিদ্র জনগোষ্টীর মধ্যে জীবিকা নির্বাহে উন্নয়ন তহবিলের মাধ্যমে ৮৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ২০০ টাকা ৩৩১ জন পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়৷
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ২০১৭-২০১৮ সাল থেকে বিভিন্ন জটিলতায় আটকে থাকে অনেক উপকার ভোগীর লভ্যাংশের টাকা মো. আনোয়ার হোসেন সরকার যোগদানের পর উপকারভোগীদের আবেদনের পেক্ষিতে জটিলতা নিরশন করে লভ্যাংশের টাকা পুনরায় চালু করেছেন। সেই টাকা পেয়ে অংশীদারদের মাঝে বিরাজ করে খুশির আমেজ, ফিরেছে স্বচ্ছলতা।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নানান অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বনবিভাগের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত ছিল৷ সেই অভিযানের আলোক গ৩ ২১-২২ শে জব্দ করা হয় ৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৮৯ ঘনফুট বালু, ৬১ টি ড্রেজার মেশিন, ৫ হাজার ১৪৫টি পাইপ, ৩০টি কোদাল, ৪৩টি বেলচা, ৮টি ট্রাক, ৩ শত ফুট রশি৷ যে কারণে বনবিভাগের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ এলাকার সাধারণ মানুষ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, যারা অবৈধ বালু উত্তোলন করে এবং এবং ড্রেজার মেশিন বসায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে৷ তাদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা ও নেয়া হচ্ছে৷
তিনি আরো বলেন, সামাজিক বনায়ন থেকে লভ্যাংশের টাকা পেয়ে উপকার ভোগী পরিবারে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল হয়েছে৷ পাশাপাশি,শত শত মানুষের কর্মসংস্থান,বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।
বনকর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকর বলেন, সামাজিক বনায়নের মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের স্বনির্ভর হতে সহায়তা করা এবং তাদের খাদ্য, পশুখাদ্য, জ্বালানী, আসবাবপত্র ও মূলধনের চাহিদা পূরণ করা। এটা আশানুরূপ সফল হয়েছে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগে।
-বাবু/এ.এস