বরগুনার আমতলীতে চোর সন্দেহে এক নির্মাণ শ্রমিককে নির্মমভাবে পিটিয়েছে আমতলী থানার কথিত ক্যাশিয়ার মো. হুমায়ুন কবির হাওলাদার। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে ওই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ঘটনায় আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের পুরান বাজার (পশ্চিম মাথা) বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর আ. সোবাহান মোল্লার চালের দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই সময় উপজেলার চাওড়া চন্দ্রা গ্রামের শানু মাতুব্বরের পুত্র নির্মাণ শ্রমিক আ. রাজ্জাক, আ. সোবাহান মোল্লার চালের দোকানের সামনে পৌরসভা কর্তৃক নির্মাণাধীন ড্রেনের কাজে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসাবে কাজ করতে ছিলো।
এ সময় চোর সন্দেহে নির্মাণ শ্রমিক আ. রাজ্জাককে আমতলী থানার কথিত ক্যাশিয়ার মো. হুমায়ূন কবির হাওলাদার (পাখি কবির), আল ফাহাদ, মনিরুল ইসলাম ধরে আ. সোবাহান মোল্লার চালের দোকানের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে বসে লাঠি দিয়ে আ. রাজ্জাককে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। সংবাদ পেয়ে নির্মাণ শ্রমিক আ. রাজ্জাকের বড় ভাই সামসুল আলম সবুজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকেও মারতে এগিয়ে আসে অভিযুক্তরা। পরে তিনি আমতলী থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত শ্রমিক আ. রাজ্জাককে উদ্ধার করে আমতলী থানায় নিয়ে আসে। পরে রাত ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ওই ঘটনায় বুধবার রাতে আহত শ্রমিক আ. রাজ্জাকের বড় ভাই সামসুল আলম সবুজ বাদী হয়ে মো. হুমায়ূন কবির হাওলাদার (পাখি কবির), আল ফাহাদ, মনিরুল ইসলামের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। নির্যাতিত ওই শ্রমিকের বড় ভাই সামসুল আলম সবুজ বলেন, অভিযুক্তরা চোর সন্দেহের বশবর্তী হয়ে আমার নিরিহ ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মিনহাজুর রহমান বলেন, আহত শ্রমিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আমতলী থানার কথিত ক্যাশিয়ার মো. হুমায়ুন কবির হাওলাদার মুঠোফোনে থানায় ক্যাশিয়ারী করার কথা স্বীকার করে বলেন, দোকান থেকে টাকা চুরি করার অপরাধে ওই শ্রমিককে আমরা পিটিয়েছি।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে আমার যা মনে হচ্ছে শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ওই শ্রমিককে পেটানো হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি, যারাই ওই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
বাবু/জাহিদ