বগুড়ায় আলমগীর হোসেন শেখ (৪৫) নামে এক নৈশ প্রহরীকে পিটিয়ে তাঁর বাম হাত ও দুটি আঙ্গুল ভেঙে দিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পালের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়া সদর ইউএনও অফিসের একটি অন্ধকার কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত আলমগীর সদর উপজেলায় এলজিডি অফিসের নৈশ্যপ্রহরী হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার চক শিয়ালকোল গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে।
পেটানোর পর আলমগীর জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ইউএনও সমর কুমার এর নির্দেশে আনছার সদস্য্যরা তাঁকে উপজেলা পরিষদের বাইরে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে আসে। পরে স্থানীয়রা, আলমগীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। জানা গেছে, বেশকিছুদিন ধরে আলমগীরের স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলছিল। এ কারণে আলমগীর তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) আলমগীরের স্ত্রী শহিদা বেগম উপজেলা পরিষদে গিয়ে স্বামীর খোঁজ করেন। স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পারিবারিক কলহের বিষয়টি অবহিত করেন এবং স্বামীর বিরুদ্ধে নালিশ করেন।
আহত আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাকে ইউএনও স্যার তার অফিসের অন্ধকার রুমে নিয়ে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারপর দুই আনসারের সহযোগিতায় আমাকে বেধড়ক মারপিট করেন। আমি বার বার ক্ষমা চাওয়া সত্ত্বেও আমাকে তিনি পেটানো বন্ধ করেননি। আমার হাত ও পা ভেঙে গেছে। আলমগীরের জামাতা মাসুদ ও মেয়ে লোপা খাতুন বলেন, ইউএনও অভিযোগ যাচাই বাছাই না করেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আনসার সদস্যদের মাধ্যমে তাঁর পিতা আলমগীরকে ইউএনওর কক্ষে ডেকে নিয়ে। তিনি নিজে এবং তার দেহরক্ষী আনসার সদস্যদের দিয়ে লাঠি দিয়ে বেদমভাবে মারপিট করেন।
বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক বলেন, মসজিদের সামনে ভীড় দেখে আমি সেখানে পৌঁছে দেখি নৈশপ্রহরী আলমগীর অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ইউএনও সেখানে পৌঁছলে স্থানীয় লোকজন এবং আলমগীরের মেয়ে ও জামাই মারপিটের কারণ জানতে চাইলে ইউএনও কোন উত্তর না দিয়ে তড়িঘড়ি করে স্থান ত্যাগ করেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে করে আলমগীরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্ব থাকা চিকিৎসক জানান, এক্স রে রিপোর্ট অনুযায়ী আলমগীরের বাম হাত এবং দুটি আঙুলও ভেঙ্গে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার বিষয়ে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমর কুমার পাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আলমগীরকে মারপিট করা হইনি, সে আহত হওয়ার অভিনয় করেছে।
বাবু/জাহিদ