সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কে জনগণের চার বছরের ভোগান্তি। ময়মনসিংহের ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়ক দেখে বুঝার উপায় নেই এটি কোন পিচ ঢালা সড়ক ছিল। সড়ক যেন চাষের জমি হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। জনভোগান্তির যেন শেষ নেই, সাধারন জনগনের প্রশ্ন-এ থেকে তাদের মুক্তি মিলবে কবে।
জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছরের ভোগান্তির পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির মেরামত কাজ করা হয়। মেরামত কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিএম এন্টারপ্রাইজ। সড়কটির কাজ শেষ হতে না হতেই তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কটি দিয়ে তিন উপজেলার যোগাযোগ। এ উপজেলা পাঙ্গাস মাছ চাষে সারাদেশে বিখ্যাত। এ এলাকার মাছ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়। এই সড়কেই পাঙ্গাস মাছের বেশি ফিসারী রয়েছে, এই সড়ক দিয়ে পার্শ্ববর্তী ভালুকা, ফুলবাড়িয়া, টাঙ্গাইলের যোগাযোগ সহজতর করেছে। এটি সবচেয়ে ব্যস্ততম একটি সড়ক। যা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে শুরু হয়ে পৌর শহরের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে।
এ সড়কে পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত শত শত ভারী যানবাহন চলাচল করে। এ অঞ্চল মৎস্য খামারের মাছ পরিবহনের যানবাহনগুলোই বেশি। রাস্তার বেহালের কারণে মাছ বাজারজাত করতে চরম ঝুঁকি পোহাতে হচ্ছে। বড় বড় খানখন্দে গাড়ীর চাকা আটকে বিকল হচ্ছে নিয়মিতই, খানাখন্দে ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আমরা অনেক বছর ধরেই এমন সড়কে চলাচল করছি। দীর্ঘ ভোগান্তির পর সড়কটি মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়, এতে মনে আশা জাগে ভালভাবে চলতে পারবো। কিন্তু সড়কের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের কাজ করে কোন রকম রাস্তা সংস্কার করে। সংস্কার হওয়ায় অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সড়ক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে আগের মত রুপনেয়। সড়ক চলাচলের এবারে অনুপয়োগী হয়ে পড়লে আমরা স্থানীয়রাসহ প্রশাসন ইট, বালু ফেলে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করি। কিন্তু বৃষ্টির পানি ও অতিরিক্ত যানবাহন ও মাছের গাড়ী চলাচলের কারণে কয়েক বছর ধরে বারবারই বেশ কয়েকটি জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তারা আরও জানায়, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কটি ত্রিশাল, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া, টাঙ্গাইলের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে তিন উপজেলার মানুষের যাতায়াত। যতই দিন যাচ্ছে এই সড়কটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। স্থানীয়দের দাবি, এভাবে কয়েকদিন পরপর ইট, বালি ফেলে এর সমাধান হবেনা। এ সড়ক নতুন করে সংস্কারের ব্যবস্থা না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আমরা এ সড়কের সংস্কার চাই, না হলে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য পথে এসে বসবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ছয় কিলোমিটার সড়কে বেশির ভাগ অংশেই সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। কোথাও কোথাও দেখে মনে হবে এটি চাষের কোন জমি। পিচ ঢালা সড়কই ছিলনা, দিন দিন সড়কের এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। বৃষ্টির পানি-কাদায় একাকার সড়কটি, এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। যানবাহন উল্টে আহত হচ্ছেন যাত্রীরা, বিকল হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন। এ চিত্র সড়কের প্রতিদিনের, চাষের জমি খানা-খন্দে ভরা সড়কে এমন ঝুঁকি আর দুর্ভোগ নিয়েই দিনের পর দিন চলাচল করছে তিন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
বাবু/জাহিদ