মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫ ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
কোন ব্যবস্থাই কাজে আসছে না
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৪২ PM
করোনা মহামারি নিয়ে দেশের মানুষ যখন চরম সংকটে, তখন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হাজির হয় ডেঙ্গু। ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম’ রোগ-ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে এটিই সঠিক ব্যবস্থা। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে নিজ বাড়ির আশপাশ অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। থাকতে হবে প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে সেই সচেতনতা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৯২ জন ও ঢাকার বাইরের ৩৩ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে ১ হাজার ৫১৪ জন ডেঙ্গু রোগী। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৩ হাজার জন। এত দিন ধারণা ছিল, ডেঙ্গু জ্বর ঢাকা মহানগরকেন্দ্রিক। কিন্তু চলতি বছর কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কক্সবাজারে এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘনবসতিপূর্ণ এ শিবিরগুলোতে নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকছে। পাশাপাশি মশার লার্ভা ও উড়ন্ত মশা মারার উদ্যোগ কম। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সচেতনতারও অভাব রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার বর্ষাকালীন মশা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ১৩ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা বা শূককীট পাওয়া গেছে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে পাওয়া গেছে প্রায় ১২ শতাংশ বাড়িতে। জরিপে মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে দক্ষিণ সিটির কমলাপুর, মতিঝিল, নবাবপুর, বংশাল, ওয়ারী ও নারিন্দা এলাকায়। আর উত্তর সিটির সেনপাড়া পর্বতা, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মহাখালী, বেগুনবাড়ি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা ও আগারগাঁওয়ে। সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর- এই চার মাস মূল মৌসুম। চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগস্ট মাসে আক্রান্ত হয়েছে সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি। সেপ্টেম্বরের প্রথম ২৩ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮১৯ জন।

এমন অবস্থায় মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবে- এ প্রত্যাশা নগরবাসীর। এ ছাড়া ডেঙ্গুর প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি, ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা, ডেঙ্গু হলে করণীয় সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা জোরদারসহ চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পরীক্ষা ও চিকিৎসার পরিসর শুধু বাড়ানোই নয়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় গভীর মনোযোগ দিতে হবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত