মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫ ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
গ্যাস বেলুন ব্যবহারে বাড়ছে বিপর্যয়
দুর্ঘটনা বন্ধে কঠোর হতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৪৫ PM
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম হাইড্রোজেনযুক্ত গ্যাস বেলুন। বিভিন্ন সভা-উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেলুন উড়িয়ে করা হয় শুভ সূচনা। দ্রুত বেলুন ফোলানোর জন্য ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করেন গ্যাস। এই গ্যাসে ভরা বেলুন সহজেই আকাশে ওড়ে। বেলুন ফোলাতে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হয় হিলিয়াম গ্যাস। এই গ্যাস ব্যবহার করা নিরাপদ। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রোজেনযুক্ত গ্যাস, যা ডেকে আনছে ভয়ংকর বিপর্যয়। হাইড্রোজেনযুক্ত গ্যাস ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যে কোনো অপরাধ বা দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে যাওয়ার পর বিচার করে শাস্তি দেওয়ার চেয়ে এ ধরনের দুর্ঘটনার পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া বেশি জরুরি।

সম্প্রতি গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে ঘটেছে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদসহ অনেকে। প্রধান অতিথির হাতে দেওয়া বেলুনগুচ্ছ না ওড়ায় মঞ্চের পেছনে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। বিক্রেতাকে বকাঝকা করলে আগুন লাগিয়ে ওড়ানোর চেষ্টা করেন। এতে বিস্ফোরণ ঘটে দগ্ধ হন পাশে বসে থাকা জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি ও পুলিশ কনস্টেবলসহ পাঁচজন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাইড্রোজেন দিয়ে বেলুন ফোলানোর ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশে প্রক্রিয়া বন্ধ করার ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। প্রতি বছরই হাইড্রোজেনযুক্ত গ্যাস বেলুন ফেটে অথবা হাইড্রোজেন গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হিলিয়াম গ্যাসের আমদানি মূল্য বেশি বলে কম মূল্যে বেলুন বিক্রির জন্য বিক্রেতারা নিজেরাই হাইড্রোজেন গ্যাস বানিয়ে সিলিন্ডারে ভরছেন। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, গ্যাস বেলুনে হিলিয়াম ব্যবহার করার কথা। হাইড্রোজেন গ্যাস বিক্রির জন্য বাংলাদেশে খুব বেশি অর্গানাইজেশন নেই। তবে বেলুন বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে হাইড্রোজেন না নিয়ে নিজেরা নিজেদের মতো হাইড্রোজেন তৈরি করে। অনেক ক্ষেত্রে হাইড্রোজেন গ্যাস তৈরির সময় বিস্ফোরিত হয়েও হতাহত হয়। তিনি আরও বলেন, হাইড্রোজেনের ক্ষতিকর ও উপকারী দুটি দিকই আছে। ল্যাবরেটরিসহ বিভিন্ন বিশ্লেষণে হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়। বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই গ্যাস। বোমা যখন বিস্ফোরিত হয় তখন প্রচুর এনার্জি রিলিজ করে। হাইড্রোজেন অক্সিজেনের সঙ্গে রিঅ্যাকশন করার ফলে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়। হাইড্রোজেন গ্যাস কিংবা হাইড্রোজেন বোমা মারাত্মকভাবে ক্ষতি করতে পারে।

বিস্ফোরক অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এক সিলিন্ডার থেকে আরেক সিলিন্ডার বা অন্য কিছুতে গ্যাস ভরা মারাত্মক অপরাধ। আর বেলুনের গ্যাস শিশুসহ সব বয়সী মানুষের জন্য বিপজ্জনক। সিলিন্ডার থেকে অন্য সিলিন্ডার বা অন্য কিছুতে ট্রান্সফার করার কারণে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত