মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫ ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
৩৯ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ
বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৩৪ PM
বেশ কিছুদিন ধরে মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই পরিস্থিতিতেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে বিভিন্ন পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দিয়ে বাজার আরও অস্থির করে তুলছে। এখন অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন পণ্যের মূল্য কারসাজি করে বাড়ানো অনেকটা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ক্রেতাকে স্বস্তি দিতে ৩৯টি পণ্যের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

তবে দাম নির্ধারণ শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ; বাজারে সেই দাম বরাবরই উপেক্ষিত। বস্তুত মূল্য কার্যকর করতেও নেই কোনো জোরালো পদক্ষেপ। দাম যে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা জানে না অনেক ভোক্তা। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করা হলেও তা অকার্যকর। বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিমত, যেসব সংস্থা, অধিদপ্তর কিংবা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়, তা কার্যকরের কৌশল তাদেরই বের করতে হবে।

তা না হলে ভোক্তারা এসব উদ্যোগের কোনো সুফলই পাবে না। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রতিকেজি মোটা চালের যৌক্তিক দাম ৪৫-৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও গত শুক্রবার খুচরা বাজারে তা বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকায়। প্রতিকেজি ভালো মানের মসুর ডালের দাম ১৩২ টাকা নির্ধারণ করা হলেও তা বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। এখন খোলা সয়াবিন তেল, বোতলজাত সয়াবিন তেল, পাম তেল, ছোলা, আদাসহ প্রতিটি পণ্যই কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বস্তুত বাজারে প্রায় সব পণ্যই যৌক্তিক দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুললেও বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা একেবারেই দৃশ্যমান নয়। অভিযোগ রয়েছে, বাজার পর্যবেক্ষণে জড়িত অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজশের কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যায়।

প্রশ্ন হলো, এসব ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নীরব কেন? অসহায় ক্রেতারা এখন অনেক জরুরি পণ্য না কিনেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মানুষ। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যেসব স্বস্তিদায়ক তথ্য দেওয়া হয়, তা যাতে বাস্তবতার সঙ্গে মেলে, সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সারা দেশে অসাধু ব্যবসায়ীদের এক অদৃশ্য অথচ শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে। এ চক্রের শক্তির উৎস খুঁজে বের করে তা ভেঙে দিতে হবে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপগুলো কোনো সুফল বয়ে আনবে না। তাই শুধু মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে ক্ষ্যান্ত হলেই চলবে না, বরং নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়নেরও উদ্যোগ নিতে হবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত