মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫ ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
মিয়ানমার থেকে গোলা নিক্ষেপ
সীমান্তে অস্থিরতা রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:০৮ PM
মিয়ানমার এখন বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়ায় চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে সীমান্তে গুলি-মার্টার সেল নিক্ষেপে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্যই এর শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ।

গত কিছুদিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলি চলছে। রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এতে এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। 

এর আগে ২৮ আগস্ট দুপুরে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল এসে পড়ে ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে। এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। কিন্তু ৩ সেপ্টেম্বর সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলী বিজিবি বিওপি সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর মাঝামাঝি এলাকায় আবারও মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ৮-১০টি গোলা ছোড়া হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আবার মুহুর্মুহু গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়। প্রায় তিন দিন গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর আবার গোলাগুলি শুরু হয়েছে। মর্টার শেলের গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে এপারের ভূখণ্ড। এতে এপারের ঘুমধুম ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে মিয়ানমারের পাহাড় থেকে মুহুর্মুহ গুলিবর্ষণের পাশাপাশি থেমে থেমে মর্টার শেল ছোড়া হচ্ছিল। বেশ কিছু গুলি ও মর্টার শেল শূন্যরেথার বিভিন্ন জায়গায় এসে পড়ছিল। রাত আটটা ২০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দে একটি মর্টার শেল আশ্রয়শিবিরের ওপর এসে পড়ে। এত ছয়জন রোহিঙ্গা আহত হন। পরে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ও পরে মিয়ানমারের একটি জেট ফাইটার বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে তুমব্রু এলাকা চক্কর দিয়ে রাখাইন রাজ্যের দিকে ফিরে গেছে। তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পাঁচ বছর ধরে আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে বসবাস করছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয়শিবির ঘেঁষে (পেছনে) মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড়। পাহাড়ের ওপর দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একাধিক তল্লাশিচৌকি। আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা জানায়, তিন দিন গোলাগুলির শব্দ কানে আসেনি। তবে আশ্রয়শিবিরের পেছনে দূরের ওয়ালিডং ও খ্য মং সেক পাহাড়ে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। গুলির শব্দ কানে বাজছে। এর মধ্যে গত সোমবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ জেট ফাইটার থেকে গোলা ও বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, গত ১৩ আগস্ট থেকে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওয়ালিডং ও খ্য মং সেক পাহাড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধ চলছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধ বন্ধের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো ২৭১ কিলোমিটার স্থল ও জলসীমানায় তৎপরতা বাড়াচ্ছে মিয়ানমার। তিন দিন ধরে সেন্ট মার্টিনের বিপরীতে (পূর্ব দিকে) মিয়ানমার জলসীমানায় দেশটির তিনটি নৌবাহিনীর জাহাজ তৎপরতা শুরু করে। তবে সেন্ট মার্টিন জলসীমানাতেও তৎপর আছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত