ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অংশ হিসেবে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে আখাউড়া-আগরতলা সাড়ে দশ কি.মি. ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কলকাতা থেকে ট্রেন আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে।
দুই দেশের সম্পর্ক বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প। ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। আঠারো মাস মেয়াদী এই প্রকল্পটি শেষ হতে একে একে পেরিয়ে গেছে চার বছর। তবুও শেষ হয়নি ‘আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেল সংযোগ নির্মাণ (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্প’র কাজ। ৫০ মাস পরও গতিহীন। ধীরগতি আর করোনা অতিমারির কারণে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পটির মেয়াদ।
তবুও আশানুরূপ অগ্রগতি নেই আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লিংক প্রকল্পের কাজে। রেললাইন প্রকল্পটির বাংলাদেশ অংশে কাজ চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। সর্বশেষ চতুর্থ দফায় আগামী বছরের ত্রিশে জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখনো যেভাবে কাজ চলছে তাতে বর্ধিত মেয়াদে কাজ শেষ হওয়া নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া থেকে আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে দশ কিলোমিটার। সাড়ে ছয় কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশে। বাকি সাড়ে চার কিলোমিটার আগরতলা অংশে। শুরুতে প্রকল্পটি পনের কিলোমিটারের ছিল। পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কমানো হলেও কাজে গতি নেই শুরু থেকেই। ভারতের নয়াদিল্লির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলী রিপন শেখ দাবি করেছেন, ভারত থেকে রেললাইন চলে এসেছে। স্লিপারও প্রায় এসে গেছে। মাটি ভরাটসহ অন্যান্য কাজ শেষে আগামী বছরের ত্রিশে জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করা যাবে।
বাংলাদেশ অংশে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রেললাইন যাবে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর সীমান্তে। এই অংশে এখনো চলছে মাটিভরাট ও ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণ কাজ। ছোটবড় প্রায় ষোলটি ব্রিজকালভার্ট নির্মাণ প্রায় শেষ দিকে। তবে বেশিরভাগ জায়গাতেই মাটি ভরাট এখনো বাকি। অন্যদিকে গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন এলাকায় ইমিগ্রেশন ও কাস্টম’স ভবন নির্মাণ কাজও বাকি প্রায় ৬০ ভাগ। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
বাবু/জেএম