পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এক গৃহবধূকে (২৪) দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে এজাহার নামীয় সাত জন এবং অজ্ঞাতনামা চার জনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার বকসীর ঘটিচোরা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম (১৯), উত্তর মিঠাখালী গ্রামের সোহরাব ফরাজীর ছেলে ইলিয়াস (২৭) ও উত্তর কালিকা বাড়ির গ্রামের জাকির হোসেন তালুকদারের ছেলে রাজু (১৮)।
থানা সূত্রে জানা যায়, সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ওই গৃহবধূ পৌর শহরের একটি ভাড়া বাসায় তার পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় আসামি রবিউল ইসলাম প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই গৃহবধূকে দেখে নেয়ার হুমকিও দেয় রবিউল। ঘটনার দিন মঙ্গলবার বিকেলে ওই গৃহবধূ তার ও বোনের দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে শহরের কে এম লতীফ সুপার মার্কেটের গ্রাফিক্স পয়েন্টে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে অটোযোগে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। কিন্তু অটোচালক ওই গৃহবধূর বাসার কাছাকাছি আসামাত্র গন্তব্য পৌঁছে না দিয়ে আসামি রবিউলের পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুতের সম্মূখ সড়ক দিয়ে গাড়িটি নিয়ে যায়।
এসময় রবিউলসহ অন্যান্য আসামিরা অপর আর একটি অটোরিকশায় এসে ওই নারী ও দুই শিশুকে ধরে মঠবাড়িয়া পিরোজপুর সড়কের পাশে উত্তর মিঠাখালী গ্রামের ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন মামুনের বাসার পিছনের নিয়ে যায়। পরে মামুনের ভাড়াটিয়া ইলিয়াসের রুমে নিয়ে আসামি রবিউল, মোতালেব ওরফে ইব্রাহীম ও রাজু গৃহবধূকে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরে তারা মোতালেবের ব্যবহৃত মোবাইলে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে। এসময় দুই শিশু কন্যা কান্নাকাটি করলে ইলিয়াস তার ঘরে থাকা সাউন্ডবক্স চালিয়ে উচ্চস্বরে গান ছেড়ে যায়। এরপর আসামিরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই ঘরে গৃহবধূকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ ৯৯৯-এ ফোন করলে রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম বাদল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলার এজাহার নামীয় তিন জনকে গ্রেপ্তার এবং ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বাবু/জেএম