যশোরে ‘শীতবস্ত্র ও মশারি বিতরণ উৎসব এবং বঞ্চিতের সংলাপ’ শিরোনামে ব্যতিক্রমী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা মোহাম্মদ জোনাব আলী, বাদাম বিক্রেতা মো. জালাল, ফেরিওয়ালা মো. জহুরুল ও বৃদ্ধা আলেয়া বেগম। ব্যতিক্রমী আয়োজনে তারা শোনালেন তাদের জীবনের গল্প। একই সঙ্গে স্বল্পআয়ের মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেছেন শীতবস্ত্র ও মশারি।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোরের সামাজিক সংগঠন ‘আইডিয়া’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রতিনিয়ত হতাশা ও বঞ্চনার শিকার মানুষদের অতিথি করা হয়। ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো. জোনাব আলী বলেন, এ অনুষ্ঠানে আমাদের যেভাবে সম্মানিত করা হলো, আগে এমন কখনো হয়নি। সাধারণ কর্মজীবী হয়ে আমরা শুধু লাইনে দাঁড়িয়ে হাত পেতে সাহায্য নেই। আর যারা দেয় তারা শুধু ছবি তোলে। আজকে আমরাই সবার হাতে মশারি কম্বল তুলে দিলাম। এমন সম্মানে চোখে পানি চলে এসেছে।
বাদাম বিক্রেতা মো. জালাল বলেন, কম্বল যেমন প্রয়োজন ছিল, তেমনি মশারির অভাবে মশার কামড়ে রাতজেগে থাকার অবস্থা হয়েছিল। এই দুই জিনিস একসঙ্গে পাওয়ায় খুব আনন্দ হচ্ছে। এর আগেও আইডিয়া থেকে বহু কিছু পেয়েছি। এখানে এসে কখনোই নিজেদের বঞ্চিত মনে হয় না, বরং মনে হয় আমরাই অতিথি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আইডিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা সহকারী অধ্যাপক মো. হামিদুল হক শাহীন বলেন, সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির মানুষেরা আমাদের আশপাশেই বেঁচে আছে। কিন্তু তারা কীভাবে বেঁচে আছেন তা জানতেই এ আয়োজন। শীতের কম্বলের পাশাপাশি ডেঙ্গু পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় সবার জন্য এবার রাখা হয়েছে বাহারি মশারিও। আমার আইডিয়া, আমার শিক্ষার্থীরা যদি একটুও শিখে যে- ‘এগুলোর কোনোটাই ত্রাণ নয় বরং এটা তাদের অধিকার’। তাহলেই আমার শিক্ষকতা সার্থক হবে! সার্থক হবে আজকের আয়োজন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব যশোরের যুগ্ম সম্পাদক মিলন রহমান, যুগান্তরের ব্যুরোপ্রধান ইন্দ্রজিৎ রায়, আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোমা খান, তানজিয়া জাহান মমতাজ প্রমুখ। সানাবিল ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠানে শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করা হয়।
বাবু/জেএম